প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে পদ থেকে অপসারণ

মানবতাবিরোধী অপরাধীর সঙ্গে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের গোপন আঁতাতের অভিযোগে শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণ ভঙ্গ এবং গুরুতর অসদাচরণের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্ইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে অপসারণ করা হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের উপ সলিসিটর এসএম নাহিদা নাজমীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এস এম নাহিদা নাজমীন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বেগম তুরিন আফরোজকে শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণ ভঙ্গ এবং গুরুতর অসদাচরণের দায়ে এ বিভাগের গত ২০/২/২০১৩ ইং তারিখের নং-সলিঃ/জিপি-পিপি/আঃট্রাঃ-০২/২০১০-৩৫ প্রজ্ঞাপনে প্রদত্ত নিয়োগ বাতিলক্রমে প্রসিকিউটরের পদ থেকে অপসারণ করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।

আজ থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

এর আগে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখা থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং পাসপোর্ট অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হককে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান।

তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ‘তাকে (তুরিন আফরোজ) মানবতাবিরোধী অপরাধের আসামি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে করা মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ওই আসামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ রয়েছে জানিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে বলেন। এছাড়া, এ বিষয়ে ওয়াহিদুল হকের কাছে প্রসিকিউটর তুরিন মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন।’

পরে বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার নজরে এলে প্রসিকিউটর তুরিনকে এ মামলা থেকে প্রাথমিকভাবে অব্যাহতি দেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর। পাশাপাশি এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। তদন্ত চলা অবস্থায় ট্রাইব্যুনালের অন্যান্য মামলা (তার হাতে থাকা) থেকেও তুরিনকে অব্যাহতি দেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে তুরিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

এরপর ২০১৮ সালের ৭ মে তুরিন আফরোজকে সংশ্লিষ্ট ওয়াহিদুল হকের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন চিফ প্রসিকিউটর। পরদিন তাকে প্রসিকিউশনের সব দায়দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটরের দুটি চিঠি, তার (তুরিন আফরোজ) সঙ্গে আসামির কথোপকথনের সিডিসহ যাবতীয় নথি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।