টেপিবাড়িতে ভাঙন সংস্কারের কাজে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী

টাঙ্গাইলের তারাকান্দি-ভূঞাপুর সড়কের টেপিবাড়িতে ভাঙন সংস্কারে কাজ করছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার (১৯ জুলাই) সকালে ভাঙন পরিদর্শনে আসেন পানিসম্পদ মন্ত্রণায়লের সচিব কবীর বিন আনোয়ার ও ১৯ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও ঘাটাইল এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারল মিজানুর রহমান শামীম বিপি।

তাদের দেয়া দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাসের পরপরই সকাল থেকে সংস্কারের কাজ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাতের তীব্র বন্যার পানিতে ভাঙনের কবলে পরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার টেপিবাড়ি এলাকায় ভূঞাপুর-তারাকান্দি বাঁধটি ভেঙে নতুন করে আরও ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভূঞাপুর-তারাকান্দি বাঁধ (সড়কটি) ভেঙে যাওয়ায় টাঙ্গাইলের সঙ্গে তারাকান্দি ও সরিষাবাড়ির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাঁধটি ভাঙার কারণে জেলার গোপালপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতি উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে জেলার বিচ্ছিন্ন হয়ে পরা যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করতে ভূয়াপুর-তারাকান্দি বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশটি মেরামত কাজে অংশ নিয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ০৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার ৬টি উপজেলায় নদী তীরবর্তী ২২টি ইউনিয়নের প্রায় ১২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বন্যা কবলিত ও পানিবন্দি মানুষগুলো এখন বসতবাড়ি, আবাদি জমিজমা আর খাদ্য শষ্য হারিয়ে কাটাচ্ছেন চরম মানববেতর জীবন। এর ফলে গবাদি পশু নিয়ে মানুষ উচু বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও জেলার পানিবন্দি প্রতিটি গ্রামেই দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। যদিও বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলে অভিযোগ বানভাসী মানুষের।

তবে এখনও বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব না হলেও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তথ্যানুসারে এ জেলার বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্ধ এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ৯টি মাধ্যমিক এবং প্রায় ৫৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর মধ্যে জেলার সর্বোচ্চ বন্যা কবলিত ভূঞাপুর উপজেলার ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি মাদরাসা ও ৪৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও ১৯১২ হেক্টর ফসলি জমি এবং সবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, বন্যাকবলিতদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও এ অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোপূর্বে ভেঙে যাওয়া অর্জুনা ইউনিয়নের তাড়াই বাঁধ ভাঙন অংশে কাজ করছে পাউবো।