যাত্রাবাড়ীর সংঘর্ষে ব্যবহার হয়েছে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবলীগ কর্মী ও দুই শিশুসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গত শনিবার রাতে শনিরআখড়ার গোবিন্দপুর নূর মসজিদ রোডে যুবলীগের অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা নিয়ে এ সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় গতকাল রবিবার যাত্রাবাড়ী থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন আহতরা। পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

গুলিবিদ্ধ হাফিজুলের ভাই আবদুল্লাহ জানান, তারা গোবিন্দপুর এলাকায় একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকেন। শনিবার রাতে বাইরে গুলির শব্দ শুনে জানালার কাছে যান। এ সময় জানালা দিয়ে শটগানের গুলি এসে দুই শিশুসহ তার ভাই ও আরেক ভাইয়ের স্ত্রীর গায়ে লাগে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পূর্ববিরোধের জের ধরে শাহদুর রহমান হ্যাপি গ্রুপ ও ৬৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের শ্যালক সাইফুল মৃধার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হলে জাহিদুল ইসলাম এনায়েত (৩০) নামে এক যুবলীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। রাস্তার পাশেই রহিম সরকারের বাড়ির দ্বিতীয়তলার জানালা দিয়ে চারজনের শরীরে গুলি লাগে।

তারা হলো হাফিজুল ইসলাম (২৪), তার ভাতিজি আবিদা (৫), ভাগনে জোনায়েদ (৩) ও ভাইয়ের স্ত্রী সাথী আক্তার (২৪)। তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তির পর গতকাল আবিদা ও জোনায়েদকে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেছেন, হ্যাপির কোনো রাজনৈতিক পদবি না থাকলেও রয়েছে নিজস্ব বাহিনী। স্থানীয় এমপির পরিবারের সঙ্গে রাখেন সুসম্পর্ক। সম্প্রতি সাইফুল এলাকায় যুবলীগের ক্লাব স্থাপন করে হ্যাপির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এ থেকেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের শুরু।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় লাইসেন্স করা শটগান দিয়ে গুলির ঘটনা ঘটেছে। তবে গুলিবিদ্ধরা আশঙ্কামুক্ত। কারা, কী উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।’ তিনি বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই অস্ত্রধারীরা সটকে পড়ে।

ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহিদুল ইসলাম এনায়েত বলেন, ‘এলাকায় মাদক ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্প্রতি একটি মিটিং করে তা প্রতিরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরই এই হামলার ঘটনা ঘটল।’

যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, ‘সংঘর্ষে আহতদের পক্ষ থেকে শাহদুর রহমান হ্যাপিকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে। শটগানটি জব্দ করা হয়েছে। অস্ত্রটি হ্যাপির বাবা ব্যবসায়ী হাফিজুরের নামে লাইসেন্স করা। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।’