মানুষখেকো পিরানহার অ্যাকুরিয়ামে ফেলে সেনাবাহিনীর জেনারেলকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন কিম

সেনাবাহিনীর এক জেনারেলকে মানুষখেকো ভয়ঙ্কর রাক্ষুসে ‘পিরানহা মাছ’ ভর্তি অ্যাকুরিয়ামে ফেলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ রিয়ংসং রেসিডেন্সের ভেতরে তৈরি বিশাল আকারের একটি অ্যাকুরিয়াম রয়েছে। সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তাকে সেই অ্যাকুরিয়ামের বিষাক্ত মাছের পেটেই যেতে হলো।

ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি স্টার বলছে, সেনাবাহিনীর ওই জেনারেলকে অ্যাকুরিয়ামে ফেলে দেয়ার আগে ছুরি দিয়ে হাত-পা ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গ চিড়ে দেয়া হয়। অ্যাকুরিয়ামে ফেলার পর রক্তের গন্ধ পেয়ে ছুটে আসে প্রাণঘাতী পিরানহা মাছের ঝাঁক। পরে তাকে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলে।

উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভাব্য অভ্যুত্থানকারীদের ঠেকানোর লক্ষ্যে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নিত্যনতুন পন্থা বেছে নিচ্ছেন কিম জং উন।

ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৭৭ সালে জেমস বন্ডের ‘দ্য স্পাই হু লাভড মি’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই অভিনব হত্যার ছক সাজানো হয়। ওই ছবির ভিলেন কার্ল স্ট্রোমবার্গ শত্রুদের ধরে এনে হাঙ্গর ভর্তি অ্যাকুরিয়ামে ফেলে দিতেন। সেখানেই হাঙ্গরের পেটে ঠাঁই হতো কার্ল স্ট্রোমবার্গের শত্রুদের।

কিম জং উনের ওই অ্যাকুরিয়ামে কয়েকশ বিষাক্ত পিরানহা মাছ রয়েছে; যা ব্রাজিল থেকে আমদানি করা। ভয়ঙ্কর বিষাক্ত এই মাছের অত্যন্ত ধারালো দাঁত রয়েছে, যা দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি দেহ থেকে মাংস ছিড়ে খেয়ে ফেলতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার এই শাসকের বিরোধীদের মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন উপায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। অনেক সময় অ্যান্টি ট্যাঙ্ক বন্দুকের সামনে দাঁড় করিয়ে গোলা ছুড়ে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়। অনেককে জীবন্ত বাঘের খাঁচায় ছেড়ে দেয়া হয়, কারো শিরশ্ছেদ, কাউকে পাহাড়ের চূড়া থেকে নিক্ষেপ অথবা কারাগারের বন্দি কক্ষে আগুন ধরিয়ে হত্যা করা হয়।

বাবার মৃত্যুর পর ২০১১ সালে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় আসা এই প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত তার জ্যেষ্ঠ প্রায় ১৬ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড এসব উপায়ে কার্যকর করেছেন। এছাড়া শত শত নাগরিককেও এভাবে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তার নিষ্ঠুর এই হত্যাযজ্ঞের তালিকায় রয়েছেন দেশটির সাবেক সেনাপ্রধান, উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ও কিউবা এবং মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত পিয়ংইয়ংয়ের দুই রাষ্ট্রদূতও।

২০১৬ সালে দুর্ব্যবহারের কারণে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-জিনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি ছুড়ে হত্যা করা হয়।

ব্রিটিশ গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ভয় জারি রেখে শাসনকার্য পরিচালনা করছেন কিম জং উন। দেশটির অনেক শত্রুকে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি চান, প্রত্যেকেই এটা জানুক; এমনকি তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোগীরাও।