রাজধানীতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, হাজার শতাংশ জমির মালিক পুলিশ কনস্টেবল

আলাউদ্দিন আলী পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করেছেন। এখন তার হাজার শতাংশ জমি। রাজধানীতে বানিয়েছেন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। এই বাড়ি করতে তিনি ব্যয় করেছেন ৫৩ লাখ ১৩ হাজার ৭ টাকা। আলাউদ্দিন বরিশালের মুলাদী উপজেলার তেরচর গ্রামের আব্দুল মজিদ আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকার রাজারবাগ আউটার সার্কুলার রোডে বসবাস করছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান করে কনস্টেবল আলাউদ্দিন আলীর আয়বহির্ভূত ২৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪ হাজার ৪২৯ টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে।

আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক। বরিশাল দুদকের উপসহকারী পরিচালক আল-আমিন তদন্ত করে আলাউদ্দিন আলীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।

আলাউদ্দিন আলী ১৯৮০ সালে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৩ সালে নায়েক পদ থেকে অবসরে যান তিনি। ৩৩ বছরের চাকরি জীবনে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হন আলাউদ্দিন। অথচ চাকরি জীবনে তার বৈধ আয় ছিল ৪৪ লাখ ১৫ হাজার ৮০ টাকা। তার এই আয়ের টাকা দিয়ে পারিবারিক, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর পর বিপুল পরিমাণ জমি কেনা নিয়ে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পেয়ে কনস্টেবল আলাউদ্দিন আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। প্রাথমিক তদন্তে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২৫ লাখ ৩৩ হাজার ৬৩৫ টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায় দুদক। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৭ সালের ৬ জুন কনস্টেবল আলাউদ্দিন আলীর বিরুদ্ধে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন।

মামলাটি তদন্তভার দেয়া হয় দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিনকে। দুদক কর্মকর্তা আল-আমিন দীর্ঘ দুই বছর তদন্তের পর সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩৩ বছরের চাকরি জীবনে আলাউদ্দিন আলী বেতন-ভাতা বাবদ আয় করেছেন ১৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৫ টাকা এবং কৃষি, গৃহসম্পত্তি, ওয়ারিশসূত্রে ও অন্যান্য বাবদ আয় করেন ২৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তার মোট বৈধ আয় ছিল ৪৪ লাখ ১৫ হাজার ৮০ টাকা।

একই সময়ে আলাউদ্দিন আলী পারিবারিক, শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ব্যয় করেছেন ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৮৬ টাকা। তার হাতে অবশিষ্ট টাকা থাকে ২৮ লাখ ৬০ হাজার ৭৯৪ টাকা।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ৩৩ বছর চাকরিকালীন আলাউদ্দিন ৫৩ লাখ ১৩ হাজার ৭ টাকার অস্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করেন। সম্পত্তি অর্জন বাবদ ব্যয় করা অতিরিক্ত ২৫ লাখ ৩৩ হাজার ৬৩৫ টাকার আয়ের কোনো উৎস দেখাতে পারেননি আলাউদ্দিন আলী।