হাইব্রিড প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের প্রথম হাইব্রিড এয়ারশিপ

হাইব্রিড প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে প্রথম বারের মতো হাইব্রিড এয়ারশিপ তৈরি করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী মো. তাসনিম রানা।

তিনি কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। তার চতুর্থ বর্ষের থিসিসের অংশ হিসেবে তিনি এই প্রজেক্টটি ডিজাইন ও তৈরি করেন। এই গবেষণার সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন কুয়েট-এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম। রানা বর্তমানে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত।

ব্যাটারির সক্ষমতা অনুযায়ী বাণিজ্যিক একটি ড্রোন সাধারণত ১৫ থেকে ২০ মিনিট আকাশে উড়তে সক্ষম। হাইব্রিড প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আকাশে ভেসে থাকার এই সময়কে বৃদ্ধি করা যায়। এমন ভাবনা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রজেক্টের জন্য তিনি তৈরি করেন হাইব্রিড এয়ারশিপ। প্রজেক্টের নাম দেওয়া হয় ‘ভিটল হাইব্রিড ইউএভি’ (VTOL Hybrid UAV)।

রানার এই উড়োযানটি চার ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে সক্ষম। এ ছাড়া এটি তিন কিলোমিটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

প্রজেক্টের নামের বিষয়ে রানা জানান, ভিটল (ভার্টিক্যাল টেক-অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং) শব্দটি সেইসব এয়ারশিপের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যেসব এয়ারশিপের উড়তে বা নামতে কোনো রানওয়ে লাগে না। এ ছাড়া একাধিক সোর্স থেকে জ্বালানি নেওয়ার কারণে হাইব্রিড এবং কোনো মানুষ ছাড়া একা চলাফেরা করতে পারে বলে আনমেনড এরিয়েল ভেইকেল শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।

তার তৈরি উড়োযানটি দুটি সোর্স থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি নিয়ে থাকে। এর মধ্যে হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম গ্যাস উড়োযানটিকে প্লবতার মাধ্যমে অভিকর্ষক বলের বিরুদ্ধে যে উড্ডয়ন শক্তির (lifting force) প্রয়োজন হয় তার যোগান দেয় এবং লিথিয়াম ব্যাটারি থেকে অবস্থান বা জায়গা পরিবর্তনের জন্য বাকি প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেওয়া হয়।

রানা জানান, তার তৈরি এই যানটি তুলনামূলক কম শব্দ করে। যানটিকে আরও সমৃদ্ধশালী করে কৃষিক্ষেত্রে গবেষণা, দুর্গম এলাকায় ওষুধ পৌঁছে দিতে, ভূ-তাত্ত্বিক জরিপসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। একই সঙ্গে সীমান্তে নজরদারিতেও ভূমিকা রাখতে পারে এই হাইব্রিড এয়ারশিপটি।

রানা আরও জানান, আইসিএমআইইই-২০১৮ কনফারেন্সে এ সম্পর্কিত গবেষণা পত্র বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড পায়।