শ্রীলঙ্কায় হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের ধর্মীয় স্থাপনা ও কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের ফিল্ড কমান্ডারদের (এসপি/ডিসির মতো মাঠ পর্যায়ের অফিসার) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতর।
এছাড়া রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপাস্ট বসানো হবে। সেখানে সন্দেহজনক কাউকে মনে হলে তল্লাশি করা হবে।
আগে থেকে ইস্টার সানডে ও পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ ছিল। শ্রীলঙ্কার ঘটনার পর নতুন করে আজ এ নির্দেশনা দেয়া হলো। তবে স্টার সানডে ও পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে কোনো হামলার খবর নেই গোয়েন্দা সংস্থার কাছে।
পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সহকারী মহা-পরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশের ফিল্ড কমান্ডারদের (এসপি/ডিসির মতো মাঠ পর্যায়ের অফিসার) সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শবে বরাত ও ইস্টার সানডেকে সামনে রেখে কেউ যাতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড না করতে পারে সেজন্য পুলিশ বাহিনী প্রস্তুতি রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হবে। তবে এই দুই ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে কোন ধরনের হামলার হুমকি কিংবা আশঙ্কা নেই।
রোববার রাজধানীর চার্চগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা চার্চগুলোতে এসে প্রার্থনায় অংশ নিয়েছেন। কাকরাইলের সেন্ট মেরীস ক্যাথেড্রাল চার্চে রবিবার সকাল ৭টায় ছিল পুনরুত্থান পাস্কাপর্ব। শেষ হয় বেলা ১০টার পর। একইচিত্র ছিল তেজগাঁওয়ের জপমালা রানীর গির্জায়। সকাল থেকে খ্রীষ্টভক্তরা ইস্টার সানডেতে খ্রীষ্টযোগে অংশ নেন।
কাকরাইলের সেন্ট মেরীস ক্যাথেড্রাল চার্চে সকালে পুলিশের বাড়তি উপস্থিতি থাকলেও দুপুরে ছিল না। বাইরে ফটকে পুলিশ সদস্যদের কাউকে দেখা যায়নি।তবে ভিতরে একজন পুলিশ সদস্য ও একজন আনসার সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
জপমালা রাণীর গির্জাকাকরাইলের তুলনায় তেজগাঁওয়ের জপমালা রানীর গির্জায় পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি ছিল বেশি।
এদিকে শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা বিষ্ফোরণের পর গুলশান কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। কোনও ধরনের হুমকি না থাকলেও নিকটবর্তী দেশ বা বিশ্বের কোথাও বোমা হামলার মতো সন্ত্রাসী কার্যক্রম হলে গুলশান কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানো হয় বলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কূটনৈতিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, এ ধরনের যেকোনো ইন্সিডেন্ট ঘটলে আমরা সাধারণত নিরাপত্তা টপ পজিশনে রাখি। শ্রীলঙ্কায় বিষ্ফোরণের পর প্রতিটি পয়েন্টে সিকিউরিটি বাড়ানো হয়েছে। কূটনৈতিক এলাকায় কোনও ধরনের হুমকি নেই। তবে নিকটবর্তী দেশ বা বিশ্বের কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমরা স্বপ্রণোদিত হয়েই সিকিউরিটি মনিটরিং বাড়াই। এবারও তাই হয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডে উদ্যাপনের সময় তিনটি চার্চ, তিনটি হোটেল ও চিড়িয়াখানা এলাকায় ভয়াবহ সিরিজ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৮৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে গির্জাগুলোর চারপাশে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হলেও কোনও ধরনের হুমকি নেই।