শ্রীলংকায় হামলার ঘটনায় সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এরদোগান

শ্রীলঙ্কায় রাজধানী কলম্বোসহ অন্যান্য এলাকার তিনটি গির্জা ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেলে কয়েক দফা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে।

রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির ক্যাথলিক গির্জায় তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া কলম্বোর মূল কেন্দ্রে অবস্থিত তিনটি বিলাসবহুল হোটেল সিন্নামন গ্রান্ড, কিংসবুরি ও শ্যাংরি লা হোটের তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে।

তবে হামলার ধরন নিয়ে এখন পর্যন্ত পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যায়নি। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে রাজধানীর একটি গির্জায়। প্রায় আধঘণ্টা পরে পরবর্তী হামলাগুলো ঘটে।

কলম্বোর জাতীয় হাসপাতালের পরিচালকের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এছাড়াও তিন শতাধিক লোক এ বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন।

এদিকে সিরিজ বোমা হামলায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষ হতাহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এ হামলাকে মানবতার ওপর আঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি। রবিবার হামলার পর এক টুইটার পোস্টে হতাহতদের পরিবারের শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এরদোগান।

এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এই ঘৃণ্য হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এছাড়াও শোকগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এখন পর্যন্ত হামলার ঘটনায় কেউ দায় স্বীকার করেনি। হামলার শিকার তিন হোটেল এবং একটি গির্জা রাজধানীতে হলেও বাকিগুলো নিগমবো ও উত্তর কলম্বোয় অবস্থিত। এসময় হাজার হাজার লোক ইস্টারের প্রার্থনারত ছিলেন।

খবরে বলা হয়েছে, কলম্বোর কোচচিকাদো অঞ্চলের সেন্ট অ্যানথনি এবং রাজধানী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে নিগমবোতে সেন্ট সেবাস্তিয়ান ও আড়াইশ কিলোমিটার দূরে আরেকটি গির্জায় হামলা হয়।

সূত্র জানায়, উদ্ধারকারীরা হতাহতদের নিরাপদ জায়গা সরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।

নিগমবো অঞ্চলের কাতাওয়াপিতিয়ায় সেন্ট সেবাস্তিয়ান গির্জার ভেতরে বিস্ফোরণে ধ্বংসের ছবি দেখা গেছে এটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে। এতে গির্জার ফ্লোরে রক্ত বয়ে যেতে দেখা গেছে। আক্রান্তদের সহায়তা সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

ফেসবুক পেজে ইংরেজিতে লেখা একটি পোস্টে লেখা রয়েছে, আমাদের গির্জায় একটি বোমা হামলা হয়েছে। যদি আপনাদের পরিবারের সদস্যদের কেউ সেখানে থাকেন, দয়াকরে এগিয়ে আসুন এবং সাহায্য করুন।

হতাহতদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকরাও রয়েছেন বলে দেশটির স্থানীয় দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রীলংকায় কেবল ছয় শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী।

এ হামলার ঘটনার পর শ্রীলংকার সরকার ইতিমধ্যে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারবিষয়ক মন্ত্রী হার্শা ডি সিলভা বলেন, কয়েক মিনিটের মধ্যে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

তিনি বলেন, আমি মানুষের মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি। বিদেশি নাগরিকসহ বহু লোক এতে হতাহত হয়েছেন। দয়া করে সবাই ঘরের ভেতরে ও শান্ত থাকুন।