প্রতিবন্ধী তরুণীকে গণধর্ষণ ও হত্যা, লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন দুই যুবক

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভোলাইল এলাকায় অজ্ঞাত সেই ২২ বছরের তরুণীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। বুধবার আদালতে গণধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার জবানবন্দি দিয়েছেন শুক্কুর আলী ও টিক্কা রাকিব নামের দুই যুবক। হত্যার সঙ্গে জড়িতে থাকলেও টিক্কা রাকিব ধর্ষণ করেননি বলে দাবি করেছেন। 

এর আগে, মঙ্গলবার আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তাদের আরেক সহযোগী জুয়েল। বুধবার জবানবন্দি নেওয়ার পর শুক্কুর আলী ও টিক্কা রাকিবকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী অফিসার ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (আইসিপি) গোলাম মোস্তফা গণমাধ্যমকে জানান, গ্রেফতার শুক্কুর আলী ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চালক। এই অটোরিকশায় করে তারা মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায়। জবানবন্দিতে তারা বলেছেন, তরুণী মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। তাকে যখন অপহরণ করা হয় তখন তরুণীর শরীরে প্রচণ্ড জ্বর ছিল।

জবানবন্দিতে শুক্কুর আলী জানিয়েছেন, গত ৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় শহরের কলেজ রোডে ঘুরতে দেখেন। এসময় কৌশলে তাকে অটোরিকশায় উঠিয়ে কাশিপুরের ভোলাইল এলাকায় নিয়ে যান শুক্কুর। সেখানে নিয়ে মেয়েটির গায়ে হাত দিয়ে দেখে শরীরে প্রচণ্ড জ্বর গা পুড়ে যাওয়ার মত। মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। এ অবস্থায় তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সহযোগীদের নিয়ে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান। বলেন, এক/দু’জন নন, তারা ৮ জন মাঠে নিয়ে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে।

তবে ধর্ষণ করে দাবি করে শুক্কুরের বন্ধু টিক্কা রাকিব জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, তিনি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় শুক্কুর এসে তাকে বলে, এখানে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল সে কোথায়? তখন টিক্কা রাকিব বলে, জুয়েল, অনিক, আবু তালেব, তৌফিক, সাগর ও রাসেল মাঠের দিকে নিয়ে গেছে। এরপর শুক্কুরের সঙ্গে টিক্কা রাকিবও মাঠে যায়। গিয়ে দেখে তারা পর্যায়ক্রমে মেয়েটিকে ধর্ষণ করছে। প্রচণ্ড জ্বরে কাঁপতে থাকা ওই তরুণীকে পরে শুক্কুরও ধর্ষণ করে। এবং সর্ব শেষে টিক্কা রাকিবকে ধর্ষণ করতে বলে শুক্কুর। টিক্কা রাকিব বলেন, ওই সময় মেয়েটি হাত পা এদিক ওদিক ছুড়ছিল-এমন মর্মান্তিক অবস্থা দেখে তিনি ধর্ষণ করেনি। তবে মেয়েটির এই অবস্থা দেখে জুয়েল বলে একে বাঁচিয়ে রাখলে সমস্যা হবে। এরপর জুয়েলের কথা মত শুক্কুর মেয়েটার গলা টিপে ধরে। সাগর, রাসেল এবং আবু তালেব মেয়েটার হাত ধরে টিক্কা রাকিব, অনিক এবং তৌহিদ পা চেপে ধরে। তবে এ পর্যায়ে শুক্কুর মেয়েটাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হলে জুয়েল মেয়েটার বুকে দুইটি ঘুষি মেরে গলা টিপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

প্রসঙ্গত, গত ৯ জানুয়ারি ফতুল্লার ভোলাইল এলাকায় পরিত্যক্ত জায়গা থেকে ২২ বছর বয়সী ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই তরুণীকে উদ্ধারের সময়ে তার পরনে ছিল সোয়েটার, চাদর ও পায়জামা।