ফরিদপুরে গ্রামবাসীর হাতে মেছো বাঘ আটক!

ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের মিটাইন পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে মাত্র একদিনের ব্যবধানে একটি মেছো বাঘকে জীবিত আটক করেছে গ্রামবাসী। এসময় আটক মেছো বাঘটির সাথে থাকা আরো দুটি বড় মেছো বাঘ পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভোররাতে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের মিটাইন পূর্বপাড়ার একটি পুকুর থেকে মেছো বাঘটিকে আটক করা হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার ভোররাতে উপজেলার একই ইউনিয়নের ঘোপঘাট দক্ষিণ পাড়ায় একটি মেছো বাঘকে আটকের পর পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। এদিকে একদিনের ব্যবধানে এধরনের ঘটনায় আতংকে ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে, তবে বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মেছো বাঘ মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয়।

জানা যায়, মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের মিটাইন পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর পাড়ে ভোর রাতে ছুটাছুটির শব্দ শুনতে পায়। ওই সময়ই বাড়ির লোকজন সবাই পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখতে পায় তিনটি মেছোবাঘ জড়াজড়ি করছে। এসময় ওই বাড়ির লোকজন চিৎকার দিলে গ্রামবাসী এগিয়ে আসলে মেছো বাঘ তিনটিকে ধরার জন্য দাবড় দিলে ছোট মেছো বাঘটি পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। অন্য বড় একটি ও ছোট একটি মেছো বাঘ দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসী পুকুর থেকে ছোট মেছো বাঘটিকে আটক করে। আটক করতে গিয়ে গ্রামবাসীর আঘাতে আহত হয় মেছোবাঘটি।

বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আব্দুর রব সাংবাদিকদের জানান, মিটাইন পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার বাড়ির পার্শবর্তী পুকুর থেকে মেছো বাঘটিকে আটক করা হয়। তিনটি মেছো বাঘের মধ্যে বড় ও ছোট একটি পালিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, দুইটি মেছোবাঘ পালিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছে।

সকালে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে চিকিৎসক গিয়ে আহত মেছো বাঘটিকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা গিয়ে মেছো বাঘটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এসময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সহকারী চিকিৎসক মিজানুর রহমান জানান, মেছো বাঘ জীবিত আটকের খবর পেয়ে মিটাইন গ্রামে গিয়ে আহত মেছো বাঘটিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। চিকিৎসার পর এখন সে সুস্থ রয়েছে।

মধুখালী উপজেলা বন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, এ খবর পাওয়ার পরপরই সকালেই বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি আরো জানান, পালিয়ে যাওয়া মেছো বাঘ দুটিকে আটক করতে অভিযান চালানো হবে।

ফরিদপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, আটক মেছো বাঘটি উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আরো জানান, মেছো বাঘ মানুষের তেমন কোনো ক্ষতি করে না। সাধারণত মাছ, মুরগি এগুলো খায়। রাতের যেকোন সময়ে মেছোবাঘটিকে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দিয়ে আসা হবে।

মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা মনোয়ার বলেন, বন কর্মকর্তা মেছো বাঘটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। মেছোবাঘ মানুষের জন্য কোনো ক্ষতিকারক না হওয়ায় বন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ রাতে লোকালয় থেকে দূরে কোথাও অবমুক্ত করে আসবে। তিনি আরো জানান, এনিয়ে এলাকাবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনা কারণ নেই।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত মঙ্গলবার ভোররাতে মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের ঘোপঘাট দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা রহমান সেকের বাড়িতে একটি ছাগল খেতে এলে একটি মেছোবাঘকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। একদিনের ব্যবধানে এধরনের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কো বিরাজ করছে।

হারুন-অর-রশীদ,ফরিদপুর প্রতিনিধি