প্রশ্নফাঁস বন্ধে প্রযুক্তির ব্যাবহার কতটা উপযোগী?

বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকদের অনেকে। তারা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এসব পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে তারা সামাজিক বিড়ম্বনাতেও পড়ছেন। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে কী কোন পদক্ষেপ নেয়ার উপায় নেই?

বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই অপরাধ সামাল দেয়া সম্ভব। বন্ডস্টাইন টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর শাহরুখ ইসলাম বলছিলেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে কেন্দ্রগুলিতে তা নিয়ে যাওয়া এবং পরীক্ষার দিন প্রশ্নপত্রের খামের সিল গালা খোলা পর্যন্ত ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রয়েছে।

তাদের গবেষণায় তারা দেখতে পেয়েছেন এই ছয়টি ধাপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখা যায় উপজেলা পর্যায়ে প্রশ্নপত্র পরিবহণ এবং দেশের ৩২৫৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ করার সময়।

মীর শাহরুখ ইসলাম বলছিলেন, যেহেতু ফেসবুক, ইমো ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে সমস্যাটা প্রকট আকার ধারণ করেছে, তাই এর জবাব প্রযুক্তির মধ্যেই খুঁজতে হবে।

কী সমাধান হতে পারে?

রিমোট আনলক স্মার্ট বক্স: প্রতিটি কেন্দ্রে এই স্মার্ট বক্সে ভরে প্রশ্নপত্র পাঠানো হলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বাক্সগুলি খুলে দেয়া যাবে। এতে নির্দিষ্ট সময়ের আগে কেউ প্রশ্নপত্রগুলো হাতে পাবে না। কেন্দ্রে বসে সার্বক্ষণিকভাবে বাক্সগুলো মনিটরিং করা যাবে। এর একটি অসুবিধে হলো এই প্রযুক্তি মোবাইল নেটওয়ার্কের সংযোগের ওপর নির্ভরশীল।

বিশ্বে এধরনের স্মার্ট সেফ বক্স ব্যবহার হচ্ছে নানা কাজে।

লিক ট্র্যাকার: এই প্রযুক্তি দিয়ে ছাপাখানা থেকে শুরু করে পরীক্ষা শুরু পর্যন্ত প্রশ্নপত্রের বাক্সগুলোতে ইলেকট্রনিক মনিটরিং করা যায়। প্রশ্নপত্রের নিরাপদ বাক্স অসময়ে খোলার চেষ্টা হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যালার্ট চলে যায় মনিটরিং সেন্টারে।বাক্সগুলো প্রতি সেকেন্ডে রিয়েল টাইম মনিটরিং করা যায় এবং প্রশ্নপত্রের দায়দায়িত্ব কার সেটি নির্ধারণ করা যায়।

ইন্টারনেট রিমোট প্রিন্টিং-এর দ্বার খুলে দিয়েছে।

রিমোট প্রিন্টিং: এর সুবিধে হলো পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে একটি মাত্র বোতাম টিপে প্রশ্নপত্র ছাপানো যায়। এতে প্রশ্ন প্রণয়নকারী ছাড়া আর কেউ প্রশ্ন ফাঁস করতে পারবে না। তবে এই প্রযুক্তিও ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। তবে এটি বেশ ব্যয়বহুল ব্যাপার। কেননা অনেকগুলো জায়গায় এই প্রিন্টিং মেশিন বসাতে হবে।