ত্রিপুরার বিধানসভার ৬০টি আসনে ভোটগ্রহণ শুরু, বাম-বিজেপি লড়াই

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার বিধানসভার ৬০টি আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ত্রিপুরায় গত পঁচিশ বছর ধরে বামপন্থীরা একটানা ক্ষমতায় রয়েছে। এবার সেখানে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি ও উপজাতীয় দল আইপিএফটি-র জোট।

ত্রিপুরাতে অন্তত ১৯টি উপজাতি গোষ্ঠীর বাস হলেও, রাজ্যে বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে নানা কারণে নির্বাচন নিয়ে ভারতে এবং ভারতের বাইরে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ত্রিপুরার সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেছেন যে এবার শাসকদল বিজেপি কমিউনিস্টদের হাত থেকে এ রাজ্য ছিনিয়ে নিতে চাইছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলছেন, বিজেপি এবার এ রাজ্য শাসন করবে। ভট্টাচার্য বলেন, তারা চাইছেন কমিউনিস্টদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে অভিজ্ঞতা নিতে আর সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কেরালায় প্রয়োগ করবেন। সেখানেও তারা সরকার গঠন করতে চান। তারা দুজনই এটা বলছেন বারবার।

ত্রিপুরাকে কেন টার্গেট করা হলো?

জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলছেন, ত্রিপুরাকে শাসক দল বিজেপির টার্গেট করার কারণ হলো সেখানে বিরোধীদল কংগ্রেস দুর্বল হয়ে পড়েছে। কংগ্রেসের দশজন বিধায়কের সাতজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। এছাড়া রাজ্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী মনোভাব চাঙ্গা হয়ে উঠছে। এসব কারণেই বিজেপির মনে হচ্ছে যে তারা এবার সরকার গঠন করতে পারবে।

জনপ্রিয়তায় কারা এগিয়ে

জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলছেন, জনপ্রিয়তায় কারা এগিয়ে সেটা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। তবে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। তিনি বলেন, বিজেপি গত নির্বাচন ১ দশমিক ৮ শতাংশ মাত্র ভোট পেয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস থেকে ও শাসক সিপিআইএমে ভাঙ্গন ধরিয়ে অনেকে যোগ দিয়েছে বিজেপিতে। ফলে দলটি শক্তিশালী হয়ে প্রধান বিরোধীদল হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রের মন্ত্রীরাও গত এক বছরে নিয়মিত সফর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দুবার ত্রিপুরায় এসে চারটি জনসভা করেছেন। দলটির শীর্ষ নেতারা অনেকে এসেছেন। অনেকদিন ধরেই তারা সংগঠনকে গড়ে তুলতে চাইছেন।

কমিউনিস্টদের কি অবস্থা?

রাজ্যে দীর্ঘদিনের শাসক হিসেবে এবার কমিউনিস্টদের কি অবস্থা জানতে চাইলে জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন সিপিআইএম এর কেন্দ্রীয় নেতারাও রাজ্য সফর করে জোর প্রচার চালিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একাই ৫০টির মতো সভায় বক্তব্য দিয়েছেন। ভট্টাচার্য জানান নির্বাচনী প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন। নাম উল্লেখ না করেও তিনি বলেছেন, সাদা পাঞ্জাবী কালো দাগে ভরে গেছে। তার মতে এমনিতে সবাই বলে মুখ্যমন্ত্রী সৎ লোক। কিন্তু রাজ্যে যে দুর্নীতি হচ্ছে সরকারি কর্মচারী ও পার্টির নিচু পর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে সেটা তিনি রুখতে হয়েছেন- এমন সমালোচনাও আছে।