গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন, দুশ্চিন্তায় মির্জা ফখরুল
শনিবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করে মির্জা ফখরুল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেয়ার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা থাকবে কি না, সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মির্জা ফখরুল।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। এই রায়কে অন্যায় দাবি করে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি।
ফখরুল বলেন, ‘মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে উপস্থিত হয়েছি। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভোমত্ব থাকবে কি না।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অধৈর্য হলে চলবে না বলেও নেতা-কর্মীদেরকে সতর্ক করেন ফখরুল। বলেন, ‘ধৈর্য ধরে সতর্ক অবস্থায় সবকিছু মোকাবিলা করতে হবে। কখনও ধৈর্যহারা হবেন না, বিশৃঙ্খল হবেন না।’ ‘আমাদের নেত্রী কারাগারে। তাকে মুক্ত করতে যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আমরা শুরু করেছি এতে কোনোভাবে যাতে ব্যাঘাত না ঘটতে পারে তাই প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে হবে। সরকারের কোনো নীলনকশা, উসকানী সবকিছুকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের বিজয় অর্জন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর বসে থাকার সময় নেই। সমস্ত চেতনাকে জাগ্রত করুন, সবাই জেগে উঠুন, বেরিয়ে আসুন, প্রতিবাদে সোচ্চার হন, রাজপথে প্রতিবাদ করুন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে একটি মিথ্যা সাজানো মামলার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। সেই কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করার জন্যে, গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্যে, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এই পথেই চলতে হবে আমাদের।’ রায়ের আগে সাজা হলে বিএনপি দেশে আগুন জ্বালানোর হুমকি দিলেও পরে খালেদা জিয়ার নির্দেশে ‘হঠকারী’ কর্মসূচি দেয়নি তারা। এই গণস্বাক্ষর কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি যেন না হয় সেজন্য নয়াপল্টনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জয়নুল আবদীন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবদুস সালাম আজাদ, রফিক সিকদার, মর্তুজা চৌধুরী তুলা, মুক্তিযাদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহম্মেদ, হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আখতার, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান, আ ক ম মোজাম্মেল হক, সরদার মো. নূরুজ্জামান, কাজী মোক্তার, মিনহাজুল ইসলাম ভুইয়া, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল, শ্রমিক দল সহ ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার গণবিছিন্ন হয়ে গেছে। তারা জোর করে অত্যাচার নির্যাতন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে তারা বাধা দিচ্ছে। নাশতকার পরিকল্পনার কথা বলে মামলা দিচ্ছে।’ ‘কিন্তু এভাবে ক্ষমতায় বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না। ইতিহাস তা বলে না। প্রতিবাদের মুখে সরকারকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে।’