ছক্কায় আফ্রিদির প্রতিদন্ধি পান্ডিয়া
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন এক বছরের কিছু বেশি সময় হলো। কিন্তু এরই মধ্যে হার্দিক পান্ডিয়া নজর কেড়েছেন। এমন একটা পেস অলরাউন্ডারের জন্য তীর্থের কাক হয়ে ছিল ভারত। কপিল দেবের যোগ্য উত্তরসূরি অবশেষে মিলল! কাল পান্ডিয়া তো ব্যাটে-বলে হারিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়াকে।
৮৭ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর নেমেছিলেন। ভারত ধুঁকছিল আরও আগে থেকে। ১১ রানে হারিয়েছিল ৩ উইকেট। ওই পরিস্থিতিতে ৬৬ বলে ৮৩ রানের কী এক ইনিংসই না খেললেন। পরে ২১ ওভারে নেমে আসা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ৪ ওভার বল করে ২ উইকেট নিয়েছেন। সেই দুটি উইকেটও আবার অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারের। ব্যাটে-বলে অস্ট্রেলীয়দের মেরুদণ্ডে আঘাত হেনে জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
তবে সব ছাপিয়ে কাল আলোচনায় এল পান্ডিয়ার ছক্কাগুলো। অমন পরিস্থিতিতে কী নির্ভার ভঙ্গিতে ব্যাট চালালেন! ৫ ছক্কার তিনটিই এসেছে অ্যাডাম জামপার করা এক ওভারে, টানা তিন বলে। পান্ডিয়া বলেছেন, ‘আমি জামপাকে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করছিলাম। সাধারণত আমার পরিকল্পনা থাকে সোজা ব্যাট চালিয়ে দেওয়া। লং অফে বা লং অনে ফিল্ডার দাঁড়িয়ে আছে কি না, তাতে কিছু যায়-আসে না। কারণ, আমি জানি, ঠিকমতো ব্যাটে লাগাতে পারলে বল সীমানা পার হবেই।’
তা হয়েছেও। তাঁর বেশির ভাগ ছক্কা গিয়ে পড়েছে গ্যালারিতে। কী নিখুঁত হিট! পান্ডিয়া ওই পরিস্থিতিতে চাপটা পুরো ঠেলে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপর। ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংটাও যে অদ্ভুতুড়ে হলো, তাতে মনে হলো, পান্ডিয়া-ধাক্কা যেন তারা পুরো সামলে উঠতে পারেনি। না হলে ২১ ওভারে ১৬৪ রানের লক্ষ্য খুব কঠিন ছিল না।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নায়ক এই তরুণ হলেও ধোনির ভূমিকাই ছিল মুখ্য। পান্ডিয়াকে মঞ্চের আলোতে রেখে নিজে প্রথমে ছিলেন নেপথ্যে। প্রথম বাউন্ডারিটাই মেরেছেন ৬৭তম বলে। আবার পান্ডিয়া আউট হয়ে যেতেই তুলেছেন ঝড়। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের ১১৮ রানের জুটি ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়েছে। ধোনি শেষ ওভার পর্যন্ত ছিলেন। ভারত শুরুর ধাক্কা সামলে ২৮১ রান তুলেছিল সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে।
পান্ডিয়াও বলেছেন, ‘এমএসডির সঙ্গে জুটিটা করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, এখনো শিখছি। আমরা সব সময় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলাম কখন কী করতে হবে। ওর সঙ্গে খেলাটাই তৃপ্তির।’
মাত্রই ক্যারিয়ার শুরু। এখনই কপিলের সঙ্গে তুলনা, ভারতের ফ্লিনটফ বা শেন ওয়াটসন বলে ফেলাটা হয়তো ঠিক হবে না। তবে শুরুর যে আভাস, তাতে শহীদ আফ্রিদিকেও মনে করিয়ে দিচ্ছেন পান্ডিয়া। অন্তত অনায়াসে ছক্কা হাঁকানোর দিক দিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডটা আফ্রিদিরই। আর ক্যারিয়ারের শুরুতে, ৪৪ ম্যাচ শেষে তাঁর ছক্কা ছিল ৩৬টি। ৪৪ ম্যাচ শেষে পান্ডিয়ার ছক্কাও ঠিক ৩৬!