গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক গণ-আদালতে সু চির বিচার শুরু

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং লাইংসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি আন্তর্জাতিক গণ-আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী শুক্রবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। অং সান সু চি-ই প্রথম কোনো নোবেল পুরস্কার জয়ী যিনি ব্যতিক্রমী এই আদালতে বিচারের সম্মুখীন হলেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষে অং সান সু চি দণ্ডিত হতে পারেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পার্মানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল (পিপিটি) নামে ওই আদালতে সোমবার শুনানি শুরু হয়। কুয়ালালামপুরের মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে অনুষ্ঠিত এ শুনানিতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল অংশ নেয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ম্যাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোসাইড স্ট্যাডিজ অ্যান্ড প্রিভেনশনের গবেষক অধ্যাপক গ্রেগরি স্ট্যানটন জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে মিয়ানমারে মুসলিম নিপীড়ন বিষয়ে সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হবে। এদিন বিকেলে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সমাপনী বক্তব্য শেষে বিবাদী পক্ষ বক্তব্য রাখবেন। বৃহস্পতিবার দিনভর বিচারকমণ্ডলীর সদস্যরা তাদের বক্তব্য পেশ করবেন। আট সদস্যের বিচারক প্যানেলে রয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্তে যুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও আইনজীবীরা।

পিপিটি মালয়েশীয় শাখার সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি চন্দ্র মোজাফফর জানিয়েছেন, পাঁচ দিনের অধিবেশনে বিচারকরা প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক, বিশেষজ্ঞ সাক্ষীদের মতামত, ভুক্তভোগীদের জবানবন্দি বিচার বিশ্লেষণ করবেন।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রায় ঘোষণা হবে। বিচারকদের এ রায় জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও গোষ্ঠীর কাছে পাঠানো হবে। এই ট্রাইব্যুনালে রোহিঙ্গা ও কাচিন সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত রাষ্ট্রীয় অপরাধের বর্ণনা দিয়েছেন। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর তথাকথিত ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের শিকার হয়ে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির ও রাখাইনের অবরুদ্ধ গ্রামে মানবেতর পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছে লাখো রোহিঙ্গা।