কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, প্রাণ হারিয়েছে ১৬ জন
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পারিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসীদের। গত ৭ দিনে পানিতে ডুবে ১৪ জন ও সাপের কামড়ে একজনসহ ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এখনও তলিয়ে আছে চরাঞ্চলের বেশির ভাগ ঘর-বাড়ি। ফলে ঘরে ফিরতে পারছেন না বানভাসীরা। বন্যার পানির প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি। বন্যার পানি নেমে গেলেও ঘরে ফিরতে পারবে না ঘর হারানো এসব মানুষ। এখনও উচু বাধ, পাকা সড়ক ও নৌকায় বসবাস করছেন দুর্গম চরাঞ্চলের বানভাসী পরিবারগুলো। গবাদিপুশুসহ গাদাগাদি করে বসবাস করলেও নিজেদের খাবারের পাশাপাশি সংকটে পড়েছেন গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়েও।
টানা ৭ দিন ধরে পানিবন্দি থাকায় খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যা দুর্গত মানুষেরা। চারনভুমি ও টিউবয়েল তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। অন্যদিকে, হাত-পায়ে ঘা, জ্বর কাশিসহ ছড়িয়ে পড়ছে পানি বাহিত নানা রোগ। বন্যা দুর্গত এলাকায় চলছে ত্রানের জন্য হাহাকার। নৌকা দেখলেই ত্রানের আশায় ছুটছে বানভাসীরা। সরকারী, বেসরকারী ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রান বিতরনে সমন্বয়হীনতায় দুর্গম চরাঞ্চলের বন্যা দুর্গতের ভাগ্য জুটছে না কিছুই। বন্যার পানি নেমে না যাওয়ায় এখনও বন্ধ রয়েছে ৫ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জেলা প্রশাসন থেকে এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য সাড়ে ৩০ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৯শ ৫১ মেট্রিক টন চাল এবং দুই হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হলেও তা ৪ লক্ষাধিক বানভাসীর জন্য অপ্রতুল। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী রোববার কুড়িগ্রামের রাজারহাটে বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রান বিতরন করবেন বলে তার সফরসূচীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মোঃ মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি