শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নাসিম

গত ১৩ জুন ইন্তেকাল করেছেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ট্রোক করে আটদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মোহাম্মদ নাসিম।

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক মন্ত্রী বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ জননেতা মোহাম্মদ নাসিম।

আজ সকালে প্রথমে রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদে নামাযে জানাজা শেষে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নিজ বাড়িতে। এরপর সকাল সাড়ে দশটায় বনানী কবরস্থানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

সকাল সাড়ে দশটায় দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ’র পক্ষে তার সামরিক সচিব, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সামরিক সচিব, এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা দলের পতাকা মুড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রীয় ১৪ দল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ, দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

নামাজে জানাজায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য বলা হলেও প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় নিতে শত শত নেতাকর্মীর ঢল নামে বনানী কবরস্থানে। বনানীতে মানুষের ঢল যেন না নামে সেজন্য রাস্তায় চেক পোস্ট বসানো হয়। তারপরও মানুষের ঢল নামে।

মৃত্যুকালে মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলেসহ অসংখ্য নেতাকর্মী, আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বর্ষিয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বনানীতে জানাজার আগে তার বড় সন্তান সাবেক এমপি প্রকৌশলী তানভির শাকিল জয় দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমার বাবা অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে আমি তার প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। তিনি বলেন, মানুষ ভুলে উর্ধ্বে নয়, আমার বাবারও ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে সন্তান হিসেবে আমি সকলের কাছে ক্ষমা চাই। আপনাদের প্রিয় নেতাকে ক্ষমা করে দেবেন।

সিরাজগঞ্জবাসীর উদ্দেশে নাসিমপুত্র জয় বলেন, সিরাজগঞ্জের মানুষের দাবি ছিল আমার পিতাকে একনজর শেষ দেখার। কিন্তু করোনাভাইরাসের কথা চিন্তা করে সিরাজগঞ্জবাসীর লাখ লাখ মানুষের দাবি পুরণ করতে পারিনি। আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।

বনানী কবরস্থানে নামাজে জানাজায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, পররাষ্ট্র মন্ত্রী একেএম আবদুল মোমেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান প্রমুখ।

পরে আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।