শ্যামনগরে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় মানুষের পাশে আস্থা ফাউন্ডেশন

নভেল করোনাভাইরাস। চীনের উহানে প্রথমে শনাক্ত হওয়া এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চলে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। বাংলাদেশে সর্বশেষ সর্বাধিক ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১,০৪৯ জনে। এছাড়াও সর্বশেষ দেশে সর্বোচ্চ ৩,১৮৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪,০৫২ জন। 

এই করনার মাঝেই উপকূলীয় মানুষের জীবনে আরও বড় অভিশাপ হয়ে এসেছিলো ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এক নিমিষেই থমকে দিয়ে গেছে জনজীবন। আর সেই জনজীবনকে করোনার মহামারীর মাঝেও নতুন করে উঠে দাঁড়াতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে আস্থা ফাউন্ডেশন। “আম্পানে আস্থা; আস্থায় বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যের আলোকে ঘুর্নিঝড় আম্পানে বিধ্বস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ঘুর্নিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহযোগিতা, পানিবন্দী মানুষদের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ফ্রি ঔষুধ বিতরণ, বানভাসি মানুষের জন্য রান্না করা খাবার সরবরাহ, বিশুদ্ধ পানি বিতরণ সহ নানাবিধ কার্যক্রম নিয়ে দুর্যোগ কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আস্থা ফাউন্ডেশন।

সংঘঠনটির অন্যতম উদ্যোক্তা মোঃ নাজমুল হুদা রুবেল বলেন, প্রথম থেকেই আমাদের চেষ্টা ছিলো সমাজের একেবারে অভাবী যে লোকটা তাকে খুঁজে বের করে তার ঘরে সাহায্য পৌঁছনো। এ জন্য আমাদের সেচ্ছাসেবীদের অন্যদের চেয়ে একটু বেশি কষ্ট করতে হয়। আমাদের একটা টিম যে এলাকায় আমরা কার্যক্রম চালাবো সেখানে আগের রাত থেকেই প্রস্তুতি নেয়, ঘরে ঘরে গিয়ে খুজে বের করে কার ঘরে পরের দিন চলার মতোও খাবার নেই। পরবর্তীতে শুধুমাত্র অসহায় সেইসব পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছনো হয়।

তিনি আরও জানান, আমাদের সীমিত তহবিলের মধ্যে আমরা যাতে সবচেয়ে অসহায় মানুষটিকে সাহায্য করতে পারি সে চেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের “আম্পানে আস্থা” এই ইভেন্টের মাধ্যমে সুপার সাইক্লোন আম্পান যাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে, তারপরও তারা বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে এরকম মানুষদের তাদের স্বপ্ন পূরণের কিছুটা অংশীদার আমরা হতে চেয়েছি। সুপেয় পানির প্রকট সংকট এলাকায় মানুষের বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে যে আহাজারি তা যতটা সম্ভব আমরা আমাদের সাধ‍্যমত পূরণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে লন্ডভন্ড দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দরবন উপকূলবর্তী জেলা সাতক্ষীরায় “আম্পানে আস্থা” নামের ইভেন্টের মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। সেখানে আমাদের শ‍্যামনগর শাখার প্রধান রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে আমাদের আস্থা ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে যতটা সম্ভব ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের কষ্ট লাঘব করার জন্য।

এলাকাবাসী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরে আজ পর্যন্ত আমাদের কেউ কিছু দেয়নি এবং খোঁজখবর নেয়নি। আস্থা ফাউন্ডেশন আমাদের খাবার পানি দিচ্ছে, ডাক্তার দেখিয়ে আবার ঔষুধও দিয়েছে। না খেয়ে থাকলে রান্না করে আমাদের মুখেও খাবারও তুলে দিয়েছে। আমরা আস্থা ফাউন্ডেশনের নিকট কৃতজ্ঞ থাকব।

কাশিমাড়ী আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ঘূর্ণিঝড়ে স্বয়-সম্বল হারানো অসহায় এক নারী জোবেদা বেগম তার বক্তব্যে বলেন, আস্থা ফাউন্ডেশন আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছে, খাবার দিচ্ছে, পানি দিচ্ছে, ঔষুধও দিচ্ছে। আমরা আস্থা ফাউন্ডেশনকে সব সময় পাশে চাই।