সাত মিনিটেই শেষ রিজভীর ক্ষমতা!

ঢাকা সিটি নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিএনপির ডাকা হরতালে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে অবস্থান নেন বিএনপির নেতকর্মীরা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে দলটির শতাধিক নেতাকর্মী সকাল থেকে সেখানে অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা সেখানে বসে নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন। নয়াপল্টন কার্যালয়ের আশপাশে পুলিশ ভিড় করছিল সকাল থেকেই।

বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের আধা ঘণ্টার মধ্যে সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের পল্টন জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম। তখন রিজভী পুলিশের কাছ থেকে ১০ মিনিট সময় চেয়ে নেন। কিন্তু ৭ মিনিটের মধ্যেই দুপুরে খাবার ও নামাজের কথা বলে কর্মসূচি শেষ করেন তিনি। রিজভীর এমন আচরণে দলের নেতাকর্মী, উপস্থিত পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।

অবস্থান কর্মসূচি শেষ করার সময় রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের এ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। সিটি নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে যে ভোট জালিয়াতি হয়ে গেল তার প্রতিবাদ জানাতেই আমাদের এই কর্মসূচি। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সরকার আটকে রেখেছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি এই অন্যায়ের দুই বছর পূর্ণ হবে। আমরা এরও প্রতিবাদ করছি।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের অন্যায়-অবিচারগুলো তুলে ধরতে এই অবস্থান নিয়েছি। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীরা এ রকম শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছে।

জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে ৩টায় কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি থাকা রুহুল কবির রিজভী দলীয় কার্যালয়ে আসেন এবং ভোর ৬টার দিকে ১৫-২০ নেতাকর্মী নিয়ে কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কিছুক্ষণ পর পর কর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভোট জালিয়াতির সিটি নির্বাচনের ফল মানি না, মানব না এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় উত্তরার বাসা থেকে মোটরসাইকেলে করে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন। তার পর তিনি ১০ মিনিটের মতো কার্যালয়ের সামনে বসেন। তার পর সাংবাদিকরা তার ছবি তুললে তিনি কার্যালয়ের তিন তলায় চলে যান।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।

তিনি এসেই বিক্ষোভরত নেতাকর্মীদের মাঝে বসে পড়েন। অনেকে তাকে সম্মান দেখিয়ে পেছনে নেতাদের সঙ্গে চেয়ারে বসতে বললেও তিনি বসেননি। কর্মীদের পাশে ফুটপাতেই বসে পড়েন। এ সময় নিজেই স্লোগানের নেতৃত্ব দেন ইশরাক। তার সঙ্গে শতাধিক নেতাকর্মী ফুটপাতে বসে স্লোগান দেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘ভোট চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর’, ‘আজকের হরতাল, চলছে-চলবে’, ‘প্রহসনের নির্বাচন মানি না, মানব না’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে নয়াপল্টন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি শফিউল বারী বাবু, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে গতকাল ভোটগ্রহণ হয়েছে। এই নির্বাচনে ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আজ রাজধানীতে হরতাল ডেকেছে দলটি।