‘হজ ক্যাম্পে ১৪ দিন থাকবে চীন ফেরতরা, স্বজনদের দেখা করতে বারণ’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে চীনের উহান থেকে বাংলাদেশিদের ঢাকায় আনার পর আশকোনা হজ ক্যাম্পে তাদের ১৪ দিন রাখা হবে। যাদের ফেরত আনা হচ্ছে, তাদের কেউই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নয়। তবে, দেশে ফেরার পর সতর্কতা হিসেবে সবাইকেই পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।এ সময়ের মধ্যে তাদের সাথে দেখা না করতে পরিবারের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, শিক্ষার্থীরা চীন থেকে আসলে আত্মীয়রা তাদের দেখার জন্য ব্যাকুল হবেন। কিন্তু আমি তাদের অনুরোধ করব, তারা যেন ব্যাকুল না হন। আমরা তাদের সময়মত সব খবর দেব। সেই ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। আমাদের আর্মি এবং পুলিশ সব বিষয়ে দেখাশোনা করবে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়।

এদিকে, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই ৩৪১ জনকে এনে প্রথমে আশকোনার হজ ক্যাম্পে রাখা হবে।

তিনি আরও বলেন, উহানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখভাল করছে। আমাদের যেভাবে বলা হচ্ছে সেভাবেই প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।

সে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন ইতিমধ্যে কাজে নেমেছেন। সংস্থাটি এই সঙ্কটে তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছে।

মুশতাক হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, আইইডিসিআর থেকে আমাকে শুক্রবার সকাল ৯টায় এয়ারপোর্টে যেতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে আমরা হজ ক্যাম্পে যাব।

অন্যদিকে, পররাস্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আজকে ৩৬১ জন দেশে ফিরবেন। এর মধ্যে ১৮ শিশু বাকিরা শিক্ষার্থীসহ ১৯টি পরিবারের সদস্য। উহানের ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। যারা আসতে চেয়েছে তাদের আনা হচ্ছে।

চীনের উহান শহরে আটকাপড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে আনতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে চীন যাচ্ছে বিশেষ বিমান। বিকেলে রওয়ানা দিয়ে মধ্যরাতে বিমানটি তাদের নিয়ে ঢাকায় ফিরবে।

প্রসঙ্গত, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৩ জনে। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০০ ছাড়িয়ে গেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। এরপর দেশটির সীমানা পেরিয়ে এই ভাইরাস বিশ্বের ১৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের বাইরে ৯১ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে চীনের বাইরে এ ভাইরাসে কারও মৃত্যুর তথ্য এখন পর্যন্ত আসেনি।