পঞ্চগড়ে চলমান গ্রেফতার আতঙ্কে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে অর্থ আদায়

মাটি খনন করে পাথর উত্তোলনের দাবিতে গত রোববার (২৬ জানুয়ারি) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে পাথর শ্রমিকরা। এসময় পুলিশ ও পাথর শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে  করে একজন বাঁশ শ্রমিক নিহত হলেও সাধারণ মানুষ, পাথর শ্রমিকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।

সংঘর্ষে এ সময় জনতার মোটরসাইকেল, র‍্যাব ও পুলিশের একাধীক গাড়ি ভাংচুর করা হয়। আর এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ দুটি মামলায় প্রায় ৭৫ জনকে এজাহার ভুক্ত করে অজ্ঞাত ৫ হাজার জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা এবং অপরটি সরকারি কাজে বাধা প্রয়োগের অভিযোগে মামলা। এর পর থেকে ভজনপুর এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে মামলার আতংক।

আর এ সুযোগকে পুঁজি করে ড্রেজার মেশিন মালিক সফিকুল আলম কেরানী (৪২) নামে একজন নিজেকে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে অর্থ বাণিজ্য শুরু করেছে। সে পুলিশের কাছের লোক/ সোর্স পরিচয়ে মামলার এজাহার নামা ও অঞ্জাত নামার লিষ্ট থেকে নাম বাদ দিতে পারবে বলে অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সে ভজনপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত ফইজুল ইসলাম (ফেকু) ছেলে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কেরানী নিজেই আতংকিত সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে বলছে মামলার লিষ্টে আপনার নাম রয়েছে। আর এমন ভয় দেখিয়ে লিষ্ট থেকে নাম বাদ দিতে পারবে বলে অর্থ আদায় করছে।

আরো জানা গেছে, কেরানী এর আগেও ভজনপুর এলাকায় মাদক ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ব্লাকমেইল করে অর্থ আদায় করেছে। এবং কি সে বিএনপি থেকে নতুন করে আওয়ামীলীগে যোগদান করে বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করছেন বলে জানাগেছে। এতে দলের ভাব মুর্তি খুন্য হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেরানী প্রকৃত পক্ষে পরিবেশ বিধংশী কয়য়েকটি ড্রেজার মেশিনের মালিক। বর্তমান তার ড্রেজার মেশিন বন্ধ থাকায় কোনো ব্যাবসা বানিজ্য নেই। তাই কৌসলে পুলিশের সাথে মিসে নিজেকে সোর্স পরিচয়ে অর্থ বানিজ্য শুরু করেছে। এর পাশাপাশি জুয়া খেলা ও মাদক ব্যাবসায়ীদের সাথে তার চলা ফেরা সবচেয়ে বেশী, যাতে করে তার এই ব্লাকমেইল ও অর্থ বানিজ্য চলে সহজেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বাংলানিউজকে আরো জানান, সফিকুল আলম কেরানী নিজেকে পুলিশের সোর্স বলে দাবি করে এবং মামলার লিষ্টে নাম রয়েছে আর সে নাম বাদ দিতে পারবে বলে টাকা চেয়েছে। তবে তার টাকা চাওয়ার পরিমান কারো কাছে ১ লক্ষ তো কারো কাছে ২ লক্ষ আবার কারো কাছে ৫০ হাজার টাকা।

পুলিশের সোর্স পরিচয়কারী কেরানীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায় ।

এর পাশাপাশি আরো বেশ কয়েকজন পুলিশের সোর্স পরিচয় প্রদান করছে বলে জানা গেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার (এসপি) ইউসুফ আলী বাংলানিউজকে জানান, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি, এতে করে পুলিশের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি