ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের নার্স ও আয়ার বিরুদ্ধে রোগীকে মারধরের অভিযোগ

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে মিতা নুর আক্তার (২০) নামের এক রোগীকে মারধর করেছেন নার্স ও আয়া। ওই রোগী মহিলা ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে সদর হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

মিতা নুর সদর উপজেলার ছোট-কামারকুন্ডু গ্রামের তসির মন্ডলের স্ত্রী এবং শহরের ব্যাপারীপাড়া এলাকার মিকাইল মন্ডলের মেয়ে মিতা

নুরের বাবা মিকাইল মন্ডল বলেন, শনিবার বিকেলে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে গলায় দড়ি দেয় মিতা। পরে তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। এ সময় তাকে জরুরি বিভাগ থেকে মহিলা ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে নিলেই ডিউটিরত আয়া ও নার্স মেয়েকে গালিগালাজ শুরু করেন। আমাদের সামনে মিতাকে নার্স বলেন ‘তুই বার বার কেন হাসপাতালে আসিস, মরতে পারিস না।’ এই বলে মিতাকে ধাক্কা দেন নার্স। সঙ্গে সঙ্গে তার পেটে লাথি দেন আয়া। এরপর থেকে মিতার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ওই সময় নার্স ও আয়ার নাম জানতে পারিনি আমি। এ নিয়ে হাসপাতালের ১২০ নম্বর রুমে গিয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সরকারি হাসপাতালে কেন আমার মেয়েকে মারবেন নার্স। আমি নার্স ও আয়ার বিচার চাই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই সময় সদর হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগে দায়িত্বরত ছিলেন নার্স আফরিন ও আয়া বিউটি আক্তার।

মহিলা ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগের রোগীদের স্বজনরা জানিয়েছেন, অসুস্থ অবস্থায় রোগীকে নিয়ে এলেই গালিগালাজ শুরু করেন নার্স ও আয়া। এরপর হঠাৎ রোগীকে ধাক্কা দেন নার্স। তার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে লাথি দেন আয়া। নার্স ও আয়ার এমন কান্ডে আমরা হতভম্ব হয়ে গেছি সবাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, রোগীকে ক্যানোলা দেয়ার সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে নার্স ও আয়া যদি রোগীর সঙ্গে সত্যিই এমন দুর্ব্যবহার করেন সেটি অবশ্যই দুঃখজনক।

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক আয়ুব আলী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব। অনাকাঙক্ষিত ঘটনা হতে পারে। সংবাদ করবেন না, মানুষ জানলে হাসপাতালের সুনাম নষ্ট হবে।

জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম বলেন, এর আগেও আমার কাছে কয়েকজন রোগীর স্বজন এমন অভিযোগ করেছেন। যদিও সদর হাসপাতাল আমার অধীনে না তবুও স্বাস্থ্য বিভাগের জেলা প্রধান হিসেবে এ বিষয়ে আমি খোঁজখবর নেব। যদি এ ঘটনায় নার্স ও আয়ার দোষ পাওয়া যায় তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি