রাজধানীতে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন, মুখ বেঁধে দিত গরম খুন্তির ছ্যাঁকা

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালি এলাকায় এক শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার নাম মালা (১০)। শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের ভর্তি করা হয়েছে।

বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে এঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ওই বাসার গৃহকর্তা রাজিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে রাজিবের স্ত্রী এবং নির্যাতনকারী দিলারা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। দিলারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নার্স।

নির্যাতনের শিকার ওই গৃহকর্মী জানায়, কুতুবখালী ডাক্তার বাড়ির পাঁচতলায় রাজিব ও দিলারার বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দেয় তার মা। সে দুই বছর আগে ওই বাসায় এসেছে এবং দুই হাজার টাকা চুক্তিতে কাজ করতো। কাজে ভুল হলে বিভিন্ন সময় নার্স দিলারা তাকে মারধর করত। ১০/১২ দিন আগে তাদের বাসা থেকে একটি দেশি মুরগি হারিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও মুরগিটা পাওয়া যাচ্ছিল না। মালা মুরগিটি ছেড়ে দিয়েছে ভেবে তাকে মারধর করে।

এরপর গত ১০ জানুয়ারি রাতে নার্স দিলারা তার মুখে হাসপাতালের রোগীদের ব্যবহৃত স্কচটেপ দিয়ে বেঁধে গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দেয় ও মারধর করে। এরপর শিশুটি নির্যাতন থেকে বাঁচতে মিথ্যা অভিযোগের দায় স্বীকার করে নেয়। পরে তাকে ছেড়ে দিলেও নির্যাতনের কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে। এরপর সে ওই বাসায়ই ছিল। তাকে কোথাও বের হতে দেয়নি। গত শুক্রবার সকালে নার্স দিলারা তাকে দোকান থেকে পান আনতে পাঠালে সে পালিয়ে যাত্রাবাড়ীর ধনিয়া এলাকায় এক আত্মীয়র বাসায় যায়। পরে তারাই পুলিশকে খবর দেয়।

এ ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় শিশুটির খালা সুমা বাদি হয়ে গত রাতে একটি মামলা দায়ের করেছে। গৃহকর্তা রাজিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গৃহকর্ত্রী দিলারাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান ডা. বিধান সরকার বলেন, এ ঘটনায় তার স্বামী গ্রেফতার হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক তার বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন। জানা গেছে, গৃহকর্মী মালার বাবার নাম রমিজ মিয়া। তার মায়ের নাম কল্পনা আক্তার। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার হাজিরা গ্রামে।