বিদেশ থেকে ৩৮ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়!

পিয়াজের বাজারের অস্থিরতা কাটছেই না। রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে আগের মতো পাওয়া যাচ্ছে না দেশি পেঁয়াজ। যৎসামান্য যা পাওয়া যায় বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। সোমবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কারওয়ান বাজারে বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। অন্যদিকে, বিদেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। একদিন আগেও দেশি ১৮০ টাকায় আর বিদেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১৬০ টাকা কেজি দরে।

ভারত, মিয়ানমার, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ এখনও বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। অথচ এই পেঁয়াজই বিদেশ থেকে আমদানি হয়েছে গড়ে মাত্র ৩৮ টাকায়!

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের তথ্যমতে, গত আগস্ট থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সাড়ে তিন মাসের বেশি সময়ে ১ হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি করেছে ৪৭ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

তারা প্রায় ৪০০ কোটি টাকা খরচে ১ লাখ ৪ হাজার ৫৫৮ টন, অর্থাৎ ১০ কোটি ৪৫ লাখ ৫৮ হাজার কেজি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে তাদের খরচ হয়েছে গড়ে ৩৮ টাকা ২৬ পয়সা।

এদিকে, পিয়াজের মূল্য কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে ৪৭ আমদানিকারককে তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। তাদের ১৩ জন গতকাল কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে হাজির হন। রবিবার রাত থেকে বেড়ে গেছে সব ধরনের পিয়াজের দাম। ফলে নাগালের বাইরে এ পেঁয়াজ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মিসর থেকে জাহাজে আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন বাজারে আসবে। এ পেঁয়াজ খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় বিক্রি হবে। এছাড়া ডিসেম্বরের প্রথমেই বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। সব মিলিয়ে আগামী ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পিয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে।

৪৭ আমদানিকারককে তলব: পিয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও দর কারসাজি সম্পর্কে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে গতকাল হাজির হয়েছেন ১৩ আমদানিকারক। কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে তারা হাজির হন। ১৩ আমদানিকারক তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গোয়েন্দা অধিদফতর থেকে তাদের তলব করা হয়। গতকাল ও আজ পেঁয়াজ আমদানিকারকদের সশরীরে সংস্থাটির কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। ৪৭ আমদানিকারকের বাকিরা আজ নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবেন।

জানা গেছে, আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে ৪৭ আমদানিকারককে শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে তলব করা হয়েছে। আমদানিকারকদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী দাম বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ যাচাই করা হবে। এরপর দায়ীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল শুনানিতে আসা ১০ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো- রাজশাহীর এমএস ফুল মোহাম্মদ ট্রেডার্স, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একতা শস্য ভাণ্ডার, এমএস সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ, নূর এন্টারপ্রাইজ, এমএস আ এম অ্যাগ্রো, টিএম এন্টারপ্রাইজ ও বিএইচ ট্রেডিং অ্যান্ড কোম্পানি, সাতক্ষীরার এমএস দীপা এন্টারপ্রাইজ প্রপার্টিজ, নওগাঁর জগদীশ চন্দ্র রায় এবং বগুড়ার এমএস সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজ।