কাশ্মীরে মুসলিম চ্যানেল দেখানোর উপর বিজেপির নিষেধাজ্ঞা

অধিকৃত কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের ওপর একের পর হঠকারী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে ভারতের হিন্দুবাদী বিজেপি সরকার। এসব সিদ্ধান্তের বেশিরভাগই গৃহীত হচ্ছে মুসলিম সংখ্যগরিষ্ঠ এই রাজ্যটির মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করার গভীর চক্রান্ত থেকে। সেখানে মোদি সরকারের অতি সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে, জম্মু ও কাশ্মীরে মুসলিম দেশগুলির কোনো চ্যানেল বা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা যাবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যের ক্যাবল অপারেটরদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত সরকার।

জানা গিয়েছে, কাশ্মীরে আশপাশের বিভিন্ন মুসলিম দেশ যেমন- ইরান, পাকিস্তান, তুরস্ক এবং মালয়েশিয়ার চ্যানেলগুলো বেশ জনপ্রিয়। সেখানকার দর্শকরা নিয়ামত এসব মুসলিম দেশের বিভিন্ন চ্যানেলের অনুষ্ঠান উপভোগ করে থাকেন। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কাশ্মীরের টেলিভিশন অপারেটররা এখন থেকে সেখানে কেবল ভারতীয় চ্যানেলগুলোই দেখাতে পারবে। সেখানে কোনো ধরনের মুসলিম দেশের চ্যানেল প্রচার করা যাবে না।

কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়েছে, ‘জানা যাচ্ছে কিছু প্রাইভেট চ্যানেল যেগুলির কোনো অনুমতি এই দেশে নেই, ক্যাবল অপারেটরদের সহায়তায় সেগুলো সম্প্রচার করা হচ্ছে। যা স্পষ্টভাবে সরকারি নিয়ম লঙ্ঘনের পর্যায়ে পরে। যা ক্যাবল টেলিভিশন অ্যাক্ট ৬(৬) আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’

ভারত সরকারের এই নির্দেশ অমান্য করে কাশ্মীরে কোনো মুসলিম চ্যানেল প্রচার করা হলে ক্যাবল অপারেটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কঠোর হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে ওই নোটিশে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে গোটা রাজ্যটিকে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে কেন্দ্রীয় সরকারের শাসন চাপিয়ে দেয়া হয়। এর আগের রাতেই আটক করা হয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে। এখনও তারা বন্দি রয়েছেন, তাদের মুক্ত করার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেয়া হয় টেলিফোন ও ইন্টারনেটসহ যোগাযোগের সকল মাধ্যম। এরপর প্রায় তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও কাশ্মীর পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বরং সেখানে অঘোষিত কারফিউ চলছে। সেখানে মেতায়েন করা হয়েছে লাখ লাখ অতিরিক্ত সেনা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার সাঙ্গাতরা যখন মাঝে মাঝে কাশ্মীরের উন্নয়নের কথা বলেন তখন সেটা সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য একপ্রকার করুণ রসিকতা হয়েই দেখা দেয়।