বড়পুকুরিয়া কয়লা আত্মসাত মামলা, সাবেক এমডিসহ ৩ জনের জামিন নামঞ্জুর

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭.৯৯ মেট্রিক টন কয়লা (যার আনুমানিক মুল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা) আত্মসাতের অভিযোগে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের সাবেক সাত ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হলে আজ আদালতে সবাই আত্মসমর্পন করেন।

এসময় এমডি ও জিএমসহ তিন জনের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। বড়পুকুরিয়া কয়লার খনির সাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমেদ, মহা-ব্যবস্থাপক (মাইন্ড অপারেশন) আবু তাহের মো: নূর-উজ-জামান ও উপ মহাব্যবস্থাপক (ষ্টোর) একেএম খালেদুল ইসলামের জামিন না মঞ্জুর করেন দিনাজপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক আজিজ আহমদ ভূঞা।

আজ বুধবার সকাল থেকে দিনাজপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দুই পক্ষের আইনজীবির যুক্তি তর্ক শেষে দুপুরে এই আদেশ দেন।

চার্জশীটের ভিত্তিতে যাদের নামে গ্রেফতারী পরায়ানা জারী করা হয়েছিল বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক সাতজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ মাহবুবুর রহমান, মোঃ আবদুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, মোঃ আমিনুজ্জামান, প্রকৌশলী এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব ও প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ।

অন্যরা হলেন- মামলায় অপর আসামিরা হলেন- সাবেক জিএম (প্রশাসন) মোঃ শরিফুল আলম, মো. আবুল কাসেম প্রধানীয়া, আবু তাহের মোঃ নুর-উজ-জামান চৌধুরী (মাইন অপারেশন বিভাগ), নিরাপত্তা বিভাগের ম্যানেজার মাসুদুর রহমান হাওলাদার, মোঃ আরিফুর রহমান (ম্যানেজার, মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন), নিরাপত্তা বিভাগের ম্যানেজার সৈয়দ ইমাম হাসান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ডিজিএম মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের ডিজিএম মো. মোর্শেদুজ্জামান, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ডিজিএম মোঃ হাবিবুর রহমান, মাইন ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ডিজিএম মোঃ জাহেদুর রহমান, ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক ডিজিএম সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ ও মো. মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজার মোঃ শোয়েবুর রহমান, স্টোর ডিপার্টমেন্টের ডিজিএম একেএম খালেদুল ইসলাম, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজার অশোক কুমার হালদার ও মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ডিজিএম মোঃ জোবায়ের আলী।

উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির পক্ষে ম্যানেজার (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা করেছিলেন।

পার্বতীপুর মডেল থানার মামলা নয়-৩০, তাং-২৪/০৭/২০১৮ ইং। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন কয়লা উধাও হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ২৩০ কোটি টাকা। ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় দুদককে। দুদকের উপ-পরিচালক মোঃ সামসুল আলম এই তদন্ত শেষে চার্জশিট তৈরী করেন। চার্জশিটে এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৪ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া তদন্তে নতুন করে ৭ জন সাবেক এমডিসহ ৯ জনের নাম বেরিয়ে আসে।

ফখরুল হাসান পলাশ, দিনাজপুর প্রতিনিধি