ফতুল্লায় আটক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক দুই ভাই নব্য জেএমবির সদস্য

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তক্কারমাঠ এলাকায় জঙ্গি আস্তানা থেকে আটক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক দুই ভাই নব্য জেএমবির সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। আজ সোমবার দুপুর সোয়া ১২টায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জঙ্গি আস্তানা থেকে মোট তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নব্য জেএমবির সদস্যের মধ্যে ফরিদউদ্দীন রুমি (২৭) ও জামালউদ্দীন রফিক (২৩) দুই ভাই। তারা দুজন নব্য জেএমবির সদস্য। অপরজন ফরিদউদ্দীনের স্ত্রী জান্নাতুল ফোয়ারা অনু (২৭)।

ফতুল্লার তক্কারমাঠ এলাকার যে বাড়ি থেকে তিনজনকে আটক করা হয়, সেটির মালিক জয়নাল আবেদীন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিজিএম)। আটক রুমি-রফিক তার ছেলে এবং অনু তার পুত্রবধূ।

আটককৃত ফরিদউদ্দিন রুমি ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল এবং প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক। তার স্ত্রী ফোয়ারা অনু অগ্রণী ব্যাংকের কর্মী। আর জামালউদ্দিন রফিক খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক।

কাউন্টার টেররিজমের প্রধান জানান, ফরিদউদ্দিন রুমিকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে এই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এখান থেকে রফিককে আটক করা হয়েছে। তারা দুই ভাই নব্য জেএমবির সদস্য।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়ির ভেতরে বিস্ফোরক ডিসপোজাল ইউনিট প্রবেশ করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক রুমির দেওয়া তথ্যমতে এই বাড়িতে আমরা অভিযান চালাই। বাড়ির ভেতরে এক্সপ্লোসিভসহ বিভিন্ন আলামত রয়েছে। রুমির দেখানো এক্সপ্লোসিভগুলো আমরা উদ্ধার ও ডিফিউজ করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’

সিটিটিসি প্রধান মনিরুল আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকায় যে ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর সঙ্গে উদ্ধারকৃত আলামতের মিল পাওয়া গেছে। আমরা আরও সার্চ করার পর বিস্তারিত বলতে পারব। এ ছাড়া রুমি-রফিক আরও কয়েকজনের নাম বলেছে, তাদের আটক করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

ওই বাড়িটিতে আরও কেউ আছে কী না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভেতরে কেউ নেই। এখানে যে থাকতো তাকে পার্শ্ববর্তী একটি বাসা থেকে আটক করা হয়েছে। তারা দুই ভাইই এখানে থাকতো। আর কেউ আসেনি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঢাকার পাশেই নারায়ণগঞ্জ, এটা ঢাকার খুব ক্লোজ জায়গা। আশেপাশে যেখানে স্বল্প আয়ের লোক বাস করে এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব একটু বেশি- সেখানকার লোকজন অন্যের খবর তেমন একটা নেয় না। এসব জায়গাগুলোই জঙ্গি সদস্যরা বেছে নেয়।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে অভিযান শুরু করে পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়কারী দল। সেখানে উপস্থিত আছেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক সাজ্জাদ রুমন। গতকাল রোববার দিবাগত রাত থেকে ফতুল্লার তক্কারমাঠ এলাকার এই বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ।