কারাগারেই কন্যা সন্তানের মা হলেন নুসরাত হত্যার আসামি মনি

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি কামরুন নাহার মনি কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। শুক্রবার ১২টা ১০ মিনিটে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে কন্যা সন্তান প্রসব করেন তিনি।

স্বাভাবিক ডেলিভারি হওয়ায় মা ও শিশু উভয়ে সুস্থ্য রয়েছেন। শনিবার বিকাল বা রোববার সকালে আসামিকে হাসপাতাল থেকে অব্যাহতিপত্র (রিলিজ) দেয়া হবে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. আবু তাহের পাটোয়ারী জানান, শুক্রবার রাতে প্রসব ব্যাথা নিয়ে আসামি কামরুন নাহার মনি ফেনী জেলা কারাগার থেকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। রাত ১২টা ১০ মিনিটে স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে কন্যা সন্তান জন্ম দেন তিনি।

ফেনী জেলা কারাগারের জেলার দিদারুল আলম জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে আসামি কামরুন নাহার মনির শারীরিক অবস্থায় খারাপ হলে কারাগার হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে মনিকে ফেনী জেনারলে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ফেনী মডেল থানা পুলিশ ও কারাগারের একাধিক কারারক্ষীদের (পুরুষ ও মহিলা) তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আসামি কামরুন নাহার মনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেলে কঠোর নিরাপত্তায় পুনরায় তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর জের ধরে গত ৬ই এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদি হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তর হয়। গত ১০ এপ্রিল মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

এ মামলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এদের মধ্যে মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, কামরুন নাহার মনিসহ ১২ জন আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছিল।