কাশ্মীরে শিয়া-সুন্নি একত্রে তাজিয়া মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ

ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গখ্যাত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে পরবর্তীতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পবিত্র আশুরা পালন করছেন উপত্যকাটির ধর্মপ্রাণ শিয়া মুসলিমরা।

এদিন যদিও ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের অংশ হিসেবে অঞ্চলটির শিয়া মুসলিমদের পাশাপাশি এবার সুন্নিরাও আশুরার তাজিয়া মিছিলে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মূলত সেই পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে গোটা অঞ্চলে কারফিউয়ের পাশাপাশি সকল তাজিয়া মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

সূত্রের বরাতে পাক গণমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানায়, গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পবিত্র আশুরার আগাম প্রস্তুতি স্বরূপ রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে শিয়া মুসলিমদের বড় একটি মিছিল বের হয়। যদিও পরে নিরাপত্তার অজুহাতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ছররা গুলি ছুঁড়ে মিছিলে আগতদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে চার সাংবাদিকসহ অসংখ্য লোক গুরুতর আহত হয় বলে জানা যায়।

তাছাড়া পরদিন রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) শ্রীনগরের রানওয়ারি এবং বাগদাম এলাকায় পৃথক দুটি ছোট মিছিলে পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১২ শিয়া মুসলিম আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, গত ৫ আগস্ট দিল্লি সরকার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল। মূলত ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের এমন পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।

যদিও এর পর থেকেই সেখানে ব্যাপক জনরোষের উদ্রেগ ঘটে। প্রায় প্রতিদিনই ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী ও সাধারণ জনগণ ছোটবড় সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারসহ রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানানো হলেও; কাশ্মীর জুড়ে এখনো সংঘর্ষ ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি পাকিস্তানের।