বাংলাদেশকে নিয়ে মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন ভারতীয় লেখিকা অরুন্ধতী

বুধবার এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী ভারতীয় লেখিকা অরুন্ধতী রায় নিজের ওই বক্তব্যের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে বিষয়টি বড় ধরনের অস্বস্তি তৈরি করেছে এবং আমি ক্ষমা চাইছি ওই ভিডিওর কারণে যদি কোনো বিভ্রান্তি তৈরি হয় সে জন্য।

২০১১ সালের এক আলোচনায় অরুন্ধতী রায় বলেছিলেন, ‘ভারত তার দেশের দক্ষিণ পূর্ব, তেলেঙ্গানা, গোয়া এবং কাশ্মীরে যেভাবে সেনাবাহিনী নামিয়েছে পাকিস্তান তার সেনাবাহিনীকে এভাবে জনগণের বিরুদ্ধে নামায়নি…’।

এ বিষয়ে বুধবার দ্য প্রিন্ট-এ প্রকাশিত বিবৃতিতে অরুন্ধতী বলেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে তার লেখায় তুলে ধরেছেন।

সম্প্রতি কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা তুলে নেয়া ও সেখানে সেনা মোতায়েনসহ অন্যান্য অধিকার বঞ্চিতের ঘটনায় আবার আলোচনায় আসে অরুন্ধতী রায়ের সেই ভিডিও।

এরপর তিনি তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়েন। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার ঘটনাটি উল্লেখ করেন অনেকে।

এর জবাবে বিবৃতিতে অরুন্ধতী রায় লেখেন, কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে এখন ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধ তুঙ্গে, আর এ সময়ে আমার নয় বছরের পুরোনো একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক গণমাধ্যমে, যেখানে কথা বলার সময় ভারতের সরকার তার জনগণের বিরুদ্ধে যে অনন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে বলতে গিয়ে, আমাকে বলতে হয়েছে যে, পাকিস্তান তার নিজের জনগণের বিরুদ্ধে কখনো এভাবে সেনা মোতায়েন করেনি, যা ভরত করেছে।

তিনি বলেন, এই ছোট ভিডিও আমার সম্পূর্ণ চিন্তাকে ধারণ করে না।

বিবৃতিতে আটমোস্ট হ্যাপিনেস’র লেখিকা বলেন, বাংলাদেশ এবং বেলুচিস্তানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যা করেছে তা সব সময় আমার লেখার অংশ ছিল।

তিনি এরপর দুটি উদাহরণ হিসেবে ২০১৭ সালে প্রকাশিত তার উপন্যাস আটমোস্ট হ্যাপিনেস থেকে উদ্ধৃতি দেন। যেখানে অন্যতম চরিত্র বিপ্লব দাসগুপ্ত ওরফে গ্যারিসন হোবার্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালিয়েছে তা উল্লেখ করে।

এ ছাড়া ২০১০ সালে প্রকাশিত ‘ওয়াক উইথ দ্য কমরেড’ শিরোনামে লেখায়ও ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া পূর্ব পাকিস্তানে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তার উল্লেখ রয়েছে বলে অরুন্ধতী বিবৃতিতে জানান।

তবে বিবৃতির শেষে মানবাধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায় লেখেন, আমি বিশ্বাস করি না রাষ্ট্র হিসেবে ভারত, পাকিস্তান বা বাংলাদেশ নৈতিকভাবে কেউ এগিয়ে আছে।