বেসরকারি বিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’!

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের বাৎসরিক ক্যালেন্ডারে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’ সংবলিত ক্যালেন্ডার ব্যবহার ও বিপণন করেছে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। সচেতন মহল বলছে, স্থানীয় প্রশাসন কি ঘুমিয়ে আছে। কিভাবে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হয়ে গেলো ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’।

উপজেলার মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের কেন্দুরবাগ বাজার সংলগ্ন অক্সফোর্ড আইডিয়াল স্কুলের নামে ছাপানো ক্যালেন্ডারে জাতীয় শোক দিবসকে ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও চলতি বছরের দীর্ঘ সাত মাস পার হয়ে গেলেও এমন গুরুতর ভুল নজরে নেননি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে এ বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দিয়েছেন এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। প্রধান শিক্ষকের এমন উত্তরে অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলেছেন কিভাবে একটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি চাকরি করছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, অক্সফোর্ড আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুর হোসেন জিরতলী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও বেগমগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের অর্থ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নাশকতার মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় তিনবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস করেছেন।

ইচ্ছাকৃতভাবে, সুকৌশলে সবাইকে ঘুমে রেখে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী এমন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। আমরা প্রধান শিক্ষকের এ রকম ন্যক্কারজনক কাজের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে অক্সফোর্ড আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুর হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জামায়াত সমর্থিত ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি ছয়-সাত বছর আগে অক্সফোর্ড আইডিয়াল স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী আশরাফকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, আমার ধারণা এটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে। কারণ বছরের আট মাস হয়ে গেলো, ইচ্ছা করলে এ সময়ের মধ্যে বাৎসরিক ক্যালেন্ডারটি সংশোধন করতে পারতেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তিনি তা করেননি। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হবে।