মহাকাশে ৩১ আলোকবর্ষ দূরে নতুন গ্রহের সন্ধান, থাকতে পারে প্রাণ
এলিয়েন বা ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের নিয়ে আগ্রহ কেবল বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বা সিনেমাতেই সীমাবদ্ধ নয়। পৃথিবী ছাড়া মহাবিশ্বের অন্য কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞানীরাও শত শত বছর ধরে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। সৌরজগতের বাইরে নতুন কোনো গ্রহ খুঁজে পেলেই শোনা গেছে সেখানে প্রাণ থাকার সম্ভাবনার কথা। কিন্তু সেই প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি।
তবে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) বিজ্ঞানীরা এবার এমন তিনটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন, যা বিজ্ঞানীদের চিরন্তন ওই প্রশ্নের সমাধানে সহায়তা করতে পারে। পৃথিবী ছাড়া আর কোনো গ্রহে প্রাণ আছে কি না, সেই রহস্যের ওপর আলো ফেলতে পারে নাসার নতুন এই আবিষ্কার।
বিজ্ঞানবিষয়ক খবরের ওয়েবসাইট সায়েন্স ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাসার ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (টিইএসএস) সম্প্রতি গ্রহ তিনটি আবিষ্কার করেছে। এই তিন গ্রহ সৌরজগতের বাইরে নিকটবর্তী একটি ইউসিএসি৪ ১৯১-০০৪৬৪২ নামের নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। নক্ষত্রটি পৃথিবী থেকে ৭৩ আলোকবর্ষ (এক বছরে আলো যে দূরত্ব অতিক্রম করে) দূরে। এটি একটি অনুজ্জ্বল, ঠাণ্ডা নক্ষত্র। সূর্যের থেকে আয়তনে ও ভরে ৪০ শতাংশ ছোট এটি। বামন এ নক্ষত্রটি সূর্যের
এক-তৃতীয়াংশ শীতল। ইউসিএসি৪ ১৯১-০০৪৬৪২-এর গ্রহ তিনটির মধ্যে যেটিতে প্রাণের সম্ভাবনা আছে, তার দূরত্ব ৩১ আলোকবর্ষ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীর মতো দেখতে ওই গ্রহে এমন তাপমাত্রা থাকতে পারে, যা প্রাণের বিকাশে সহায়তা করতে পারে। তবে এর বায়ুমণ্ডল খুব হালকা বলে ধারণা করা হচ্ছে, একই সঙ্গে এর ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেশ উষ্ণ।
গ্রহগুলোর অনুসন্ধানী দলের প্রধান ম্যাক্সিমিলিয়ান গুন্থার বলেন, এ গ্রহটি বেশ শান্ত। এটি সৌরজগতের খুব কাছে অবস্থিত। আরও কিছু দিন পর্যবেক্ষণের পর এই গ্রহ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। গ্যাস আর পাথুরে গ্রহ কীভাবে এই জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে তা বুঝতে এই নতুন গ্রহগুলো সাহায্য করতে পারে।
তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেখা যায়, নক্ষত্রটি প্রতি দিন দশমিক ৯ দিন পরে মিটিমিটি করেছে। তখনই বিজ্ঞানীদের সন্দেহ হয়, তাকে প্রদক্ষিণ করে নিশ্চয়ই কোনো গ্রহ ঘুরছে। এরপরই তারা আরও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হন যে নক্ষত্রটিকে কেন্দ্র করে জিজে ৩৫৭ বি, জিজে ৩৫৭ সি ও জিজে ৩৫৭ ডি নামের তিনটি গ্রহ ঘুরছে। এর মধ্যে জিজে ৩৫৭ বি ও জিজে ৩৫৭ সি নামের গ্রহ দুটি গ্যাসীয় হলেও জিজে ৩৫৭ ডি গ্রহটি পাথুরে। এর তাপমাত্রাও তুলনামূলক কম। এ কারণেই বিজ্ঞানীদের ধারণা গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে।