বান্দরবানে স্বাভাবিক হয়নি সড়ক যোগাযোগ, বন্যা কমলেও বেড়েছে জনদূর্ভোগ

বান্দরবানে বন্যার পানি কমলেও বেড়েছে জনদূর্ভোগ। কয়েকদিনের ভারী বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় জনসাধারনের দূর্ভোগ বেড়ে গেছে। বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ায় সাঙ্গু নদীর পানি কমে যাওয়ায় বন্যার্তদের বাড়ী ঘর থেকে পানি সরে গেলেও কাদার কারনে বাড়ীতে যেতে পারছে না আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষজন। অনেকের ঘরবাড়ী বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ঘরের কাদা আসবাবপত্র পরিস্কার করতে হিমসিম খাচ্ছে ক্ষুদ্র পরিবারের লোকজন।

এছাড়া শ্রমজীবী মানুষের ঘর ডুবে যাওয়ায় নিজেদের ঘর পরিস্কারের কাজে ব্যস্ত থাকায় কাজের জন্য মানুষও পাওয়া যাচ্ছে না। বন্যা কবলিত এলাকায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। এদিকে বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর বালাঘাটা পুল পাড়া এলাকায় নবনির্মিত ব্রীজটি উদ্ধোধনের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন সড়কে দেখা দিয়েছে ফাটল, অনেক এলাকায় সড়ক ধসে গেছে। কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ী ভেঙ্গে গেছে। বন্যার পানিতে ডুবে কমপক্ষে দেড় শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে কয়েক হেক্টর আবাদী জমির ফসল। প্রশাসন সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষতির পরিমান জানাতে না পারলেও ধারনা করা হচ্ছে এবারের বন্যায় কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বন্যার কারনে জেলার দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এদিকে সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার পানি সরে গেলেও সাতকানিয়ার বাজালিয়া এলাকায় সড়কের পানি না সরায় টানা এক সপ্তাহ ধরে সারা দেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

এর ফলে বাইরে থেকে কোন জিনিষপত্র আনতে না পারায় বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে পড়েছে। যা স্টক ছিল তা শেষ হয়ে গেলে খাদ্য সঙ্কটও দেখা দিতে পারে। এদিকে বন্যা কবলিত এলাকা ও আশ্রয় কেন্দ্র গুলো ঘুরে দেখা গেছে সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সংকট এবং কিছু কিছু বন্যার্থী ত্রাণ সামগ্রী পায়নি বলে অভিযোগ করেছে। সোমবার সকালে প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও বন্যায় কবলিত লোকজনদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

বান্দরবানের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলম বলেন, বন্যার পানি সরে গেছে। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ এখনো স্বাভাবিক হয়নি। বন্যা পরবর্তী মানুষের দূর্ভোগ কিছুটা বেড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার খবর পেয়েছি। সাত উপজেলা থেকে আমরা ক্ষয়-ক্ষতির তথ্য সংরক্ষণ করছি। বান্দরবান সদর ও লামা উপজেলায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ একটু বেশি হয়েছে। তবে এখনো সুনির্দিষ্ট করে ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ জানানো যাচ্ছে না। চারিদিকে বন্যা কবলিত হওয়ায় পুরো জেলায় সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে এখনো অনেক মানুষ রয়েছে। তাদেরকে শুকনা খাবার ও খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে।

সোহেল কান্তি নাথ, বান্দরবান প্রতিনিধি