ভোক্তার অধিকার রক্ষায় ফের অভিযানে নামলেন শাহরিয়ার
ফের অভিযানে নেমেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় নকল বইয়ের বাজারে অভিযান চালান তিনি। বদলি ও পুনরায় আগের কর্মস্থলে যোগাদানের পর এটাই তার প্রথম অভিযান।
অভিযানের বিষয়ে মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ভেজালবিরোধী অভিযান করেছি। ঈদের পর আজকেই প্রথম অভিযানে নেমেছি। আজকে বইয়ের বাজারে অভিযান চালিয়েছি। আগামীতে গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খাদ্যপণ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর অভিযান চালানো হবে।
তিনি আরও বলেন, এখানে বিদেশি বই পাইরেসির মাধ্যমে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আসল বইয়ের চেয়ে নকল বই বেশি দামে বিক্রি করছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৩ জুন মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরির অভিযোগে অফিসার্স ক্লাব ও পাঞ্জাবির দাম বেশি নেয়ায় আড়ংকে জরিমানা করায় তাকে বদলি করা হয় বলে গুঞ্জন।
এর আগে গত ৩ জুন মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ভোক্তা অধিদফতর থেকে বদলি করে তাকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিতে বলা হয়। নোংরা পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরির অভিযোগে অফিসার্স ক্লাব ও পাঞ্জাবির দাম বেশি নেয়ায় আড়ংকে জরিমানা করায় এ বদলি করা হয় বলে গুঞ্জন ওঠে। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে সমালোচনার ঝড়। এর পরদিনই ৪ জুন বদলি আদেশটি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
পরে ১২ জুন জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে তাৎক্ষণিক বদলির ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।
আড়ংয়ের ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোজার সময় যদিও আমি দেশের বাইরে ছিলাম, তখনও বেশকিছু বড় বড় জায়গায় হাত দিল বলে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হঠাৎ একটা ব্যবস্থা নেয়া হলো। আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণ ছোটখাটোদের ধরতে পারবে আর বড় অর্থশালী সম্পদশালী হলেই তাদের হাত দেয়া যাবে না, তাদের অপরাধ অপরাধ না- এটাতো হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজকেই বলে দিচ্ছি তাকে (মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার) ওই দায়িত্বই দিতে হবে। কারণ খুব দামি দামি জায়গা, তাদের যে খারাপ কিছু থাকবে না বা হবে না যারা ওগুলোর মালিক তারাও তো এই গ্যারান্টি দিতে পারেন না। সেখানে কেন পরীক্ষা করতে পারবে না, পরীক্ষা করার অধিকারটা কেন থাকবে না?’
অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অপরাধী সে অপরাধী। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন বড় বড় জায়গা আছে যেখানে হাত দিলেই দেখা যায় হাতটা পুড়ে যাচ্ছে এবং যারা এই কাজটি করতে যায় তারা অপরাধী হয়ে যায়।’
দুর্নীতি দমন সংস্থার মধ্যে অনেকেই দুর্নীতিব্যাধিতে আক্রান্ত বলে জনশ্রুতি আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একেবারেই মিথ্যা নয়। সবাইতো ধোয়া তুলসিপাতা না। এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না যে সবাই একশ ভাগ সৎ হবে।’
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে যেন জনগণের নেতিবাচক ধারণা তৈরি না হয় সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্থাকে এখন থেকে সচেতন হতে হবে যারা কাজ করবে তাদের ব্যাপারেও যেন সতর্ক থাকে, তারাও যেন এমন কোনো কাজ না করে যাতে এমন জনশ্রুতি সৃষ্টি না হয়।