অত্যাচার থেকে পুত্রবধূকে বাঁচাতে ছেলেকে গুলি

ছেলের অত্যাচার থেকে পুত্রবধূকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন মা। এ সময় ছেলের সঙ্গে মায়ের ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় স্বয়ংক্রিয় রিভলবার থেকে গুলি বেরিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছেলে। ছেলের নাম মনোজ শর্মা। এমনটাই ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরে।

যে রিভলভারের গুলিতে মনোজ আহত হন, সেটি  তিনিই মা রেণুকাদেবীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এই ঘটনার পরে এলাকাবাসীরা ছুটে এসে আহত মনোজকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ওই রিভলবার নিয়ে কাড়াকাড়ির সময়েই গুলি বেরিয়ে মনোজের পেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়। পুলিশের ধারণা, এটি দুর্ঘটনা। তা সত্ত্বেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই যুবকের মাকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রেণুকাদেবীর দুই সন্তান। একজন কলকাতায় থাকেন। মনোজ থাকেন হাওড়ায়। বছর চারেক আগে তাঁর বিয়ে হয় হাওড়া সিটি পুলিশের হোমগার্ড বেবি প্রসাদের সঙ্গে। বিয়ের পরে মনোজ হাওড়ার নন্দলাল মুখার্জি লেনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, মনোজ স্থানীয় এক প্রোমোটারের ছেলের গাড়ি চালান। কিছু দিন ধরে মনোজ প্রায়ই রাতে বাড়ি ফিরছিলেন না। ফিরতেন ভোরে, মত্ত অবস্থায়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হতো।

অভিযোগ, মনোজ স্ত্রীকে মারধরও করতেন। পুলিশ জানায়, এদিনও মনোজ মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরেন। তা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ফের অশান্তি শুরু হয় তার। শুধু তাই নয়, নিজের মৃতা শাশুড়ির উদ্দেশেও গালিগালাজ করতে থাকেন তিনি। উত্তেজনার বশে হঠাৎ পকেট থেকে একটি স্বয়ংক্রিয় রিভলভার বের করেন মনোজ। তখনই মনোজের মা রেণুকা শর্মা ছেলে ও পুত্রবধূর মাঝে এসে দাঁড়ান।

মাকে দেখেই নিজের হাত থেকে রিভলভারটা মায়ের হাতে তুলে দেন মনোজ এবং পকেট থেকে অন্য একটি রিভলভার বার করে স্ত্রীর দিকে তাক করে গুলি চালানোর হুমকি দিতে থাকেন। ছেলেকে আটকাতে গিয়ে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখনই মায়ের হাতে ধরা রিভলভার থেকে গুলি ছুটে যায়। গুলি লাগে মনোজের পেটে। মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আওয়াজ পেয়েই প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে আসে পুলিশও।

একজন গাড়িচালকের কাছে দুটি স্বয়ংক্রিয় রিভলভার এলো কী করে? এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারাই। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটা একটা দুর্ঘটনা। স্ত্রীকেও সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখা হচ্ছে না। মনোজ সুস্থ হলেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অস্ত্র আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হবে।