ফরিদপুরে ভূমিষ্ঠ হওয়া কন্যা সন্তান পিতৃ পরিচয় পাবে কি?
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চৌধুরীকান্দা সদরদী গ্রামের বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান নেয়া সেই প্রেমিকা কন্যা সন্তান প্রসব করেছে। অসুস্থাবস্থায় গত সোমবার (২৭ মে) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ভোরে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কন্যার সন্তানটির নাম রাখা হয়েছে ফাতেমা। শিশুটির মা তার সন্তানের পিতৃপরিচয় ও তাকে (নিজকে) স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার দাবী জানিয়েছে।
জানা গেছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বার বার ধর্ষণের পর অন্ত:সত্ত্বা প্রেমিকা ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবীতে গত ১৭মে সকাল থেকে প্রতিবেশী প্রেমিক লুৎফর রহমানের বাড়ীতে অবস্থান নেয়। ১০দিন অবস্থান নেওয়ার পর ২৭ মে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।
এদিকে ওই প্রেমিকার স্বজনরা প্রেমিকের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় শিশুটির ক্ষতি করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, প্রেমিক লুৎফরের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল দিয়ে ঘোরাফেরা করে শিশু ও তার মায়ের উপর নজর রাখছে। কখন কি করে এই ভয়ে রয়েছি আমরা।
বাবা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দিনমজুরি করে চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনোরকম সংসার চলে আমার। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় টাকার জন্য মেয়েটিকে করিম জুট মিলে কাজ করতে পাঠাই। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে লুৎফর আমার মেয়ের এই সর্বনাশ করেছে। আমি আমার মেয়ের ভূমিষ্ঠকৃত কন্যা সন্তানের পিতৃ পরিচয় যাতে পায় সেই ব্যবস্থা যেন প্রশাসন করে।
শিশুটির মা জানায়, আমার সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর ধরে প্রেম করে আসছে লুৎফর। আমার গর্ভের সন্তান এবং স্ত্রীর মর্যাদা দেবে বলে কয়েক মাস ধরে ঘোরাচ্ছে। আমার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে লুৎফর, আমি আমার মেয়ের ও স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে সমাজে বাঁচতে চাই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশুতোষ বলেন, মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের অভিনয় করে আসছিল ওই গ্রামের ছিদ্দিক তালুকদারের ছেলে লুৎফর তালুকদার (২৫)। লুৎফর তালুকদার বছর খানেক আগে ওই গ্রামের পাঁশের একটি মেয়েকে বিয়ে করে। বিয়ের পরও প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক করে লুৎফর। এতে করে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্তা হয়ে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে।
ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলায় হয়েছে, মামলা নং-৫১। মামলা রেকর্ডের পর থেকে আমরা লুৎফরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, এই ঘটনার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবেনা ।
হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি