সিএনএসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেঃ রেলপথমন্ত্রী

‘রেল সেবা অ্যাপ’-এর মাধ্যমে বাসায় বসে আসন্ন ঈদুল ফিতরে রেলের অগ্রিম টিকেট ইন্টারনেটের মাধ্যমে কিনতে পারবেন টিকিট প্রত্যাশীরা- এমনটিই জানিয়েছিল রেল মন্ত্রণালয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে টিকিট প্রত্যাশীরা এই কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। বুধবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট প্রত্যাশী যাত্রীরা এই অভিযোগ করেন।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। মন্ত্রী বলেন, অ্যাপসে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সিএনএসের সঙ্গে ২০০৭ সাল থেকে চুক্তি। এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে আর বাড়ানো হবে না। সিএনএসের ব্যর্থতার দায় আমরা এড়াতে পারি না। তাই অবশ্যই সিএনএসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এবার কার্যক্রমে ভিন্নতা রয়েছে। অ্যাপসে ৫০ শতাংশ টিকিট দেওয়া হয়েছে। অনেক অভিযোগ করেছেন, যে সেবা পাওয়ার কথা, সেই কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। এটা দুঃখজনক। যাতে ভবিষ্যতে বিড়ম্বনা না হয়, ঈদের পর আমরা ব্যবস্থা নেবো।

জানা যায়, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৭০০০ হাজার অগ্রিম টিকিট দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর অর্ধেক দেওয়া হবে রেল সেবা অ্যাপের মাধ্যমে। কিন্তু রেল সেবা অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটতে পারছেন না টিকিট প্রত্যাশী যাত্রীরা। অ্যাপের মাধ্যমে সব টিকিট বিক্রি না করা গেলে সেসব টিকিট কাউন্টারে বিক্রি করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলের আগাম টিকিট বিক্রি আজ থেকে শুরু হয়েছে। অগ্রিম টিকিট বিক্রি বুধবার থেকে থেকে শুরু হয়ে ২৬ মে পর্যন্ত চলবে। কমলাপুরের পাশাপাশি এবারই প্রথম অগ্রিম টিকেট ঢাকা স্টেশন, বিমানবন্দর, বনানী, তেজগাঁও স্টেশন এবং ফুলবাড়িয়া থেকে বিক্রয় করা হচ্ছে।

দীর্ঘ ১৮ ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষার পর টিকিট পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কনক। টিকিট পেয়ে যেন চাঁদকেই হাতে পেয়েছেন তিনি। কনক জানালো, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে তিনি এবার ঈদে পঞ্চগড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। চারটি টিকিট কিনেছেন কনক। মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে তিনি কমলাপুরে এসে লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় টিকিট হাতে পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন তিনি।

এদিকে, কমলাপুরে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে তৎপর রয়েছে পুলিশ, আনসার ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। টিকিট কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যিক হওয়ায় এবার কিছুটা হলেও টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য কমেছে।

রেলওয়ের তথ্য মতে, বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলবে। আজ দেওয়া হবে ৩১ মে’র টিকিট। একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারছেন। কমলাপুর ছাড়াও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন, তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন, বনানী স্টেশন থেকে নেত্রকোনাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেন এবং ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলভবন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি একই সময়ে শুরু হয়েছে।

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ মে দেওয়া হবে ১ জুনের টিকিট, ২৪ মে দেওয়া হবে ২ জুনের টিকিট, ২৫ মে দেওয়া হবে ৩ জুনের টিকিট এবং ২৬ মে দেওয়া হবে ৪ জুনের টিকিট। ফেরত যাত্রীদের জন্য ২৯ মে দেওয়া হবে ৭ জুনের টিকিট, একইভাবে ৩০ ও ৩১ মে এবং ১ ও ২ জুন দেওয়া হবে যথাক্রমে ৮, ৯, ১০ ও ১১ জুনের টিকিট।