মাংসের বাজারে অভিযান, ভয়ে দোকান ফেলে পালাল ব্যবসায়ীরা

রাজধানীর মেরাদিয়া বাজারে একটি অংশে সারিবদ্ধ মাংসের দোকান। এসব দোকানের কোনো কোনোটাতে বিক্রেতারা মূল্যতালিকায় ঠিকঠাক গরুর মাংসের দাম ৫২৫ টাকা এবং খাসির মাংসের দাম ৭৫০ টাকা টাঙিয়ে রেখেছেন। কিন্তু বিক্রির বেলায় বিষয়টি আলাদা। ক্রেতা এলেই গরুর মাংসের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৫০ টাকা। ক্রেতাকে বলা হচ্ছে, সরকার ৫২৫ টাকা ঠিক করে দিলেও সেই দামে মাংস বিক্রি করে পোষায় না।

গতকাল বৃহস্পতিবার ক্রেতা সেজে ভোক্তা অধিদপ্তরের একটি দল বাজারটিতে যায়। সেখানে নতুনভাবে এই অপরাধ চোখে পড়ে তাদের। পরে যখন সদলবলে তারা অভিযান পরিচালনা শুরু করে তখন ব্যবসায়ীরা অনেকে ভয় পেয়ে যায়। অভিযানটি আবার ফেসবুকে লাইভ করছিল কয়েকজন। এসব দেখে ‘কবিরের মাংস বিতান’-এর বিক্রেতা দৌড়ে পালিয়ে যান। তাঁকে ডাকাডাকি করেও ফেরানো সম্ভব হয়নি। পরে ভোক্তা অধিদপ্তরের দলটি তাঁর দোকানের প্রায় এক মণ মাংস জব্দ করে। এই মাংস পরে তিনটি মাদরাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।

অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (উপ সচিব) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি মেরাদিয়া বাজারের কবিরের দোকানে বেশি দামে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোনে গেলে কবির দোকান থেকে পালিয়ে যান। আমরা কাউকে না পেয়ে দোকানে থাকা এক মণ মাংস জব্দ করি। পরে পাশের তিন মাদরাসা ও এতিমখানায় তা বিতরণ করা হয়।

এছাড়া বেশি দামে গরুর মাংস বিক্রি ও মূল্য তালিকা না থাকায় রাজধানীর সবুজবাগসহ বিভিন্ন এলাকার ১০ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে এলাহী মাংস হাউসকে তিন হাজার, রূপসী বাংলা গোশত বিতানকে তিন হাজার, সন্দ্বীপ গোশতের দোকানকে তিন হাজার, মায়ের দোয়া গোশত বিতানকে তিন হাজার, বকুলের গোশত দোকানকে তিন হাজার, মোতালেবের গোশতের দোকান তিন হাজার, আলমের গোশতের দোকান পাঁচ হাজার, মাশাল্লাহ গোশত বিতানকে তিন হাজার, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে দেশি সুপার শপ অ্যান্ড ফার্মাকে ১৫ হাজার এবং জয়নাল স্টোরকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযান পরিচালনা করেন অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আফরোজা রহমান ও ইন্দ্রানী রায়। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) -১ সদস্যরা।