শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর মরদেহ

বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে। সেখানে সুবীর নন্দীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। বুধবার (৮ মে) বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। এর আগে সকাল পৌনে সাতটার দিকে রিজেন্ট এয়ারের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে তার মরদেহ নেওয়া হয় গ্রীন রোডের বাসায়।

বেলা সোয়া ১১টার দিকে সুবীর নন্দীর প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী রেজাউল করিম ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন গীতি কবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান রফিকুল সংগীতশিল্পী রফিকুল আলম, ফকির আলমগীর, শুভ্রদেব, এস ডি রুবেল, সাব্বির মহিন, এইচডি রুবেল মেহেরাব, কিশোর পুলক, চিত্রনায়িকা নূতন, খায়রুল আলম শাকিল, রেজওয়ানা চৌধুরীসহ অনেকে।

শহীদ মিনারের পর শেষবারের মতো তাকে নিয়ে যাওয়া হবে এফডিসিতে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে রামকৃষ্ণ মিশনে এবং দুপুরে সবুজবাগে বরদেশ্বরী কালীমন্দির ও শ্মশানে একুশে পদক পাওয়া সঙ্গীত শিল্পী সুবীর নন্দীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী বাংলাদেশ সময় গতকাল ভোর সাড়ে ৪টায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

এর আগে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল তাঁর। ১৮ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় সুবীর নন্দীকে।

বাংলাদেশে সুবীর নন্দীর চিকিৎসার বিষয়টি সমন্বয় করছিলেন অধ্যাপক সামন্তলাল সেন। তিনি বলেন, ‘বারবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তাঁর, সেইসঙ্গে সুবীর নন্দীর মাল্টিপল অর্গান ফেইলিউর হচ্ছিল।’

সংগীতে অবদানের জন্য এ বছরই সুবীর নন্দীকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার। বেতার, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকে তাঁর অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকের জন্য চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি।

দেশের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর ১৯৮১ সালে প্রথম একক অ্যালবাম সুবীর নন্দীর গান প্রকাশ হয়। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছরের সংগীত ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছর তিনি পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক।

সুবীর নন্দীর গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো—ও আমার উড়াল পঙ্খি রে, কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়, চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন, বধূ তোমার আমার এই যে পিরিতি, একটা ছিল সোনার কইন্যা, কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো, আমি বৃষ্টির কাছ থেকে, দিন যায় কথা থাকে, আশা ছিল মনে মনে ইত্যাদি।