ফণী থেকে রক্ষা পেতে আজ সন্ধ্যার মধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে সবাইকে

ভারতের উপকূল অতিক্রম না করলেও এটি বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আসবে। যেভাবেই হোক ফণী বাংলাদেশে আসবেই। আর এ কারণে সম্ভাব্য সকল স্থাপনার ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে।

ঘণ্টায় ১৬০-১৮০ কিলোমিটার গতির বাতাস হাজার কিলোমিটার ব্যাসের বিস্তার নিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণী। বাংলাদেশে এর আঘাতে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে উপকূলের দুই জেলা খুলনা ও বরগুনা। এ জন্য মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ এবং চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে।

ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে খুলনা অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন লেভেলের বাতাসের সংস্পর্শে আসতে শুরু করবে। তাই ওই দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যার আগেই উপকূলীয় জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সচিবালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল জানান, উপকূলীয় জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মানুষদের শুক্রবার সন্ধ্যার আগেই আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, উপকূলীয় ১৯ জেলায় তিন হাজার ৮৬৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব জেলায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষদের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসবে।

অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। এ সময় শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে সারারাত ‘অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল’ সময় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা দেখেছি ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে খুলনা অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন লেভেলের বাতাসের সংস্পর্শে আসতে শুরু করবে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ খুলনা অঞ্চল ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় এসে যাচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সারারাত বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে। এ সময়টা আমাদের জন্য ‘অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল সময়’।

তিনি বলেন, এ সময়ে যারা উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করেন তারা দমকা বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসের সম্মুখীন হবেন। এই সময় সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আরও বলেন, যোগাযোগ অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা থাকতে হবে। আবহাওয়া অধিদফতরের ওয়েবসাইটে বেলা ১১ থেকে ১২টার মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার লোক একই সঙ্গে হিট করেছে, এজন্য এটি হ্যাং হয়ে গেছে। এর ক্যাপাসিটি থাকা উচিত ছিল ৫ থেকে ৭ লাখ, কিন্তু সেটি নেই।

তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের বিদ্যুৎ এক সেকেন্ডও বন্ধ থাকতে পারবে না। এরপর আমার ইন্টারনেটের ওঠানামা হতে পারবে না। তা নাহলে আমি অ্যানালাইসিস করতে ব্যর্থ হব। ডাটা ডাউনলোড করতে পারব না।