বান্দরবানে এলজিইডির সড়ক নির্মাণ কাজে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার

বান্দরবানের এলজিইডির অর্থায়নে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণ নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সড়ক নির্মাণ কাজে চলছে বালির পরিবর্তে পাহাডের মাটি, নিম্মমানের ইটসহ নানা রকম অনিয়ম ও দূর্নীতি। ইতোপূর্বে সম্পাদিত সড়কের পাশের ড্রেনগুলোও ফেটে গেছে বিভিন্ন স্থানে। পার্বত্য মন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারের এহেন স্বেচ্ছাচারী কাজের জন্য ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তবে ঠিকাদার গতানুগতিক নিয়মেই দাবী করছেন কাজে কোন অনিয়ম ও দূর্নীতি হচ্ছে না।

জানা গেছে, হাজার হাজার মানুষের চার যুগেরও অধিক সময় ধরে ভোগান্তি লাগবে জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে সোনাইছড়ি হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ কাজটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করেন বান্দরবান আসনের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। প্যাকেজ ভিত্তিক বরাদ্দের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই এই সড়কের ৮০ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বাকী কাজও চলমান। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়িতে থেকে ঘুমধুম যাওয়ার সড়কে বৈদ্যছড়া-বড়ইতলী কাজটি চলমান রয়েছে। নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে দেখা গেছে, সড়কের পাশে নিম্মমানের ইট মজুদ করে রাখা হয়েছে। বালির পরিবর্তে ডাম্পারে করে এনে দেওয়া হচ্ছে পাশের পাহাড়ী লাল মাটি। যদিওবা রাস্তার পাশে লোকদেখানোর জন্য কিছু বালি মজুদ রাখলেও সেই বালিও কাদা ময়লাযুক্ত নিম্মমানের। এছাড়াও সড়কের পাশে ইউ ড্রেন, এল ড্রেনগুলোর বেশ কয়েকটি স্থানে ফাটল ধরেছে আবার অনেক স্থানে পানি যাওয়ার এল ড্রেন সামান্য মাটির উপর ঢালাই করে দায়সারা কাজ করেছে ঠিকাদার।

আরও জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা বরাদ্দে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বৈদ্যছড়া থেকে বড়ইতলী লাকড়ীছড়া বাজার পর্যন্ত সড়কে ২টি ব্রিজসহ ১ কি: মিটার সড়ক নির্মাণ কাজ পায় বান্দরবানের আবছার কন্সট্রাকশন। সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দা অনুময় তংচঙ্গ্যা, কিরন তংচঙ্গ্যা শাহাজাহান, আহরণ তংচঙ্গ্যাসহ অসংখ্যা এলাকাবাসী অভিযোগে জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারনে ঠিকাদার ব্যপক দূর্নীতি আশ্রয় নিচ্ছে সড়ক নির্মাণে।

তারা আরো জানান- সড়কটিতে বালির পরিবর্তে জামিরতলী বৌদ্ধ বিহার পাহাড়ের মাটি এনে রাস্তায় রোলার ছাড়া বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ইট ব্যবহার করা হচ্ছে তা খুবই নিম্মমানের। তাদের অভিযোগ আবছার কন্সট্রাকশন প্রতিষ্ঠানটি যেখানে কাজ করেন অনিয়ম দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এই জন্য পার্বত্য মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার নুরুল আবছার জানান- কাজে কোন অনিয়ম দূর্নীতি হচ্ছে না। ড্রেন ফাটল দেখা দিলেও অসমাপ্ত কাজ ইঞ্জিনিয়ার অফিস বুঝে নিবে না। তবে পাহাড়ের মাটি নয় জমিনের মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। কাজ প্রায় সম্পুন হয়ে গেছে।

এই প্রসঙ্গে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা নাইক্ষংছড়ি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান- কাজ চলমান আছে। এ পর্যন্ত ৯০ ভাগ কাজ সম্পাদন হয়েছে। তবে কাজে ১০ পার্সেন্ট পর্যন্ত ২নং ইট ব্যবহার করা যায় বলে দাবী করেন এই কর্মকর্তা।

 

সোহেল কান্তি নাথ, বান্দরবান প্রতিনিধি