বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি আগামীকাল

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার এ বিষয়ে শুনানির জন্য আসলে রাষ্ট্রপক্ষে সময় আবেদন করেন। পরে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামীকাল দুপুর ২টায় এ বিষয়ে শুনানির জন্য নতুন এ সময় নির্ধারণ করেন।

আজ অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষে সময় আবেদনটি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশিরুল্লাহ।

খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, কায়সার কামাল, মীর মোহাম্মদ হেলালুদ্দীন।

খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘বিগত সময়ে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার না পেলেও এবার পাবেন বলে আশা করছি।’

জানা গেছে, জেল থেকে মুক্তি পেতে হলে জিয়া চ্যারিটেবল মামলাসহ আরও তিনটি মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন পেতে হবে।

এর আগে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে পর্দার অন্তরালে সরকারের শীর্ষ মহলের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা চলছে। যেহেতু খালেদা জিয়ার মনোভাবে বোঝা গেছে তিনি প্যারোলে রাজি নন, সে কারণে একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির ছয় বিজয়ীর শপথ নেওয়ার মাধ্যমে এ সমঝোতা হতে পারে। এই শপথের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমের এই খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র এক নেতা কয়েক দিন আগে আমাদের সময়কে বলেন, কোনো খবর যখন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, তখন ধরে নিতে হবে কোথাও না কোথাও এর ভিত্তি আছে। এ উদ্যোগ যে দলীয়ভাবেই হতে হবে এমনটা নয়; দলের বাইরেও হতে পারে। তবে জনগণের কাঙ্ক্ষিত সিদ্ধান্ত হঠাৎ করেই হয়ে যায়। খালেদা জিয়ার মুক্তির ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটতে পারে।

ওই নেতা বলেন, জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল-এ দুটি মামলা বাদে অন্য সব মামলায় বেগম খালেদা জিয়া জামিনে আছেন। সরকারের দিক থেকে বাধা সৃষ্টি না করলে জামিনযোগ্য ওই দুই মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে যেকোনো সময় মুক্ত হবেন।

একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপি থেকে নির্বাচিত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন শপথ নিয়েছেন। শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ নেননি। আজ শপথ গ্রহণের শেষ দিনে জাতীয় সংসদ ভবনে গিয়ে শপথ নেন বিএনপির চার সংসদ সদস্য। তারা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হারুনুর রশিদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে নির্বাচিত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ও বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচিত মোশাররফ হোসেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার অনেকটা আকস্মিকভাবেই ঠাকুরগাঁও-৩ আসেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান শপথ নেন। পরে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। তাই তাদের নির্বাচিতদের শপথ না নেওয়ার বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত কাজে দেয়নি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়া সবাই এরই মধ্যে শপথ নিয়েছেন।