গির্জায় হামলার পরেও প্রতিশোধ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার খ্রিষ্টীয় প্রধান

শ্রীলঙ্কায় গির্জায় কয়েক দফা বোমা হামলার পরে কোন ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য শ্রীলঙ্কার জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কলম্বোর কার্ডিনাল আর্চবিশপ ম্যালকম রানজিথ।

বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গুজবের ওপর ভিত্তি করে কেউই প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিবেন না। এসময় তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে এবং শান্তির পক্ষে কাজ করতে বলেছেন।

কার্ডিনাল আর্চবিশপ ম্যালকম রানজিথ আরও বলেন, “আমাদের সবার জন্য এটা খুবই দুঃখজনক এক পরিস্থিতি। ইস্টার সানডে-তে এধরনের কোন হামলা হতে পারে আমরা কল্পনাও করিনি। যে গির্জাগুলিকে লক্ষ্য করে হামরা হয়েছে তার মধ্যে দুটি – কচিকাডেতে সেন্ট এন্টনি গির্জা এবং নেগাম্বোতে সেন্ট সেবাস্টিয়ান গির্জায় বিস্ফোরণগুলো খুবই শক্তিশালী ছিল।

তিনি আরও বলেন, “তারা হামলা করার জন্য এমন এক দিন বেছে নিয়েছে যেদিন বহু মানুষ গির্জায় আসবেন উপাসনা করার জন্য এবং গির্জাগুলো মানুষে ভর্তি থাকবে।“

এখন পর্যন্ত হামলার ঘটনায় কেউ দায় স্বীকার করেনি। হামলার শিকার তিন হোটেল এবং একটি গির্জা রাজধানীতে হলেও বাকিগুলো নিগমবো ও উত্তর কলম্বোয় অবস্থিত। এসময় হাজার হাজার লোক ইস্টারের প্রার্থনারত ছিলেন।

খবরে বলা হয়েছে, কলম্বোর কোচচিকাদো অঞ্চলের সেন্ট অ্যানথনি এবং রাজধানী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে নিগমবোতে সেন্ট সেবাস্তিয়ান ও আড়াইশ কিলোমিটার দূরে আরেকটি গির্জায় হামলা হয়।

সূত্র জানায়, উদ্ধারকারীরা হতাহতদের নিরাপদ জায়গা সরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।

নিগমবো অঞ্চলের কাতাওয়াপিতিয়ায় সেন্ট সেবাস্তিয়ান গির্জার ভেতরে বিস্ফোরণে ধ্বংসের ছবি দেখা গেছে এটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে। এতে গির্জার ফ্লোরে রক্ত বয়ে যেতে দেখা গেছে। আক্রান্তদের সহায়তা সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

ফেসবুক পেজে ইংরেজিতে লেখা একটি পোস্টে লেখা রয়েছে, আমাদের গির্জায় একটি বোমা হামলা হয়েছে। যদি আপনাদের পরিবারের সদস্যদের কেউ সেখানে থাকেন, দয়াকরে এগিয়ে আসুন এবং সাহায্য করুন।

হতাহতদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকরাও রয়েছেন বলে দেশটির স্থানীয় দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রীলংকায় কেবল ছয় শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী।

এ হামলার ঘটনার পর শ্রীলংকার সরকার ইতিমধ্যে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারবিষয়ক মন্ত্রী হার্শা ডি সিলভা বলেন, কয়েক মিনিটের মধ্যে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

তিনি বলেন, আমি মানুষের মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি। বিদেশি নাগরিকসহ বহু লোক এতে হতাহত হয়েছেন। দয়া করে সবাই ঘরের ভেতরে ও শান্ত থাকুন।