বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে চার ধাপ নিচে নেমেছে বাংলাদেশ

বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা বিষয়ক বৈশ্বিক সূচকে চার ধাপ নিচে নেমে গেছে বাংলাদেশ। ১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫০তম। দুই ধাপ নিচে নেমে ভারতের অবস্থান ১৪০, আর তিন ধাপ নিচে নেমে পাকিস্তান আছে ১৪২-এ। গতকাল বৃহস্পতিবার প্যারিসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের (আরএসএফ) বার্ষিক প্রতিবেদনে এ সূচক প্রকাশ করা হয়।

বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক-২০১৯ এ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে। শীর্ষ পাঁচ দেশের সবই ইউরোপের। তালিকার সর্বশেষ দেশ তুর্কমেনিস্তান। আরএসএফের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের নিরাপদে কাজ করতে পারা দেশের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, আর স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরালো করা অব্যাহত রেখেছে। সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন ব্যাপক বেড়েছে। মাঠপর্যায়ে সংবাদকর্মীদের ওপর রাজনৈতিক কর্মীদের হামলা, নিউজ ওয়েবসাইট বন্ধ এবং সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনা বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সরকারের কড়া নীতির শিকার বাংলাদেশি সাংবাদিকরা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন নির্বাহীরা। এই আইনে নেতিবাচক প্রচারের শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড। যেসব সাংবাদিক ও ব্লগার ধর্মনিরপেক্ষ মত প্রকাশের সুরক্ষা চান, তারা উগ্রবাদীদের হয়রানি ও হত্যার শিকার হচ্ছেন। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার বিশ্বের সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন ও হামলার ঘটনা নথিবদ্ধ করে তা প্রতিরোধে কাজ করে। সংস্থাটির ২০১৯ সালের সূচকে দেখা গেছে, সাংবাদিকদের ওপর ঘৃণা সহিংসতায় পরিণত হচ্ছে। ফলে বিশ্বে ভয়ের পরিবেশ বাড়ছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের গ্রেফতারের ঘটনা সামনে এনেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার। বলা হয়েছে, সরকার বিরোধীদের দমন করতে বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহারের নজির এই ঘটনা। পর পর তিন বছর এই সূচকে প্রথম স্থান অর্জন করল নরওয়ে। এবার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড। সাইবার নিপীড়ন বাড়ায় একধাপ নিচে নেমে সুইডেনের অবস্থান তিনে। চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ক। তালিকায় সবার নিচে রয়েছে তুর্কমেনিস্তান। এর পর ধারাবাহিকভাবে ওপরের দিকে রয়েছে উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, চীন ও ভিয়েতনাম।