ছাত্রদের সাথে সমকামিতায় লিপ্ত হতেন সিরাজ!

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার মূল হোতা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। তার নির্দেশে নুর উদ্দিন ও শাহাদাতের পরিকল্পনায় তাকে হাত-পা বেধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত মারা যান।

নুসরাত হত্যার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সেই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে যৌন নিপীড়ন ও পরে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ছেলেদের বলাৎকারও করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের লাইভে এসে এই অভিযোগ করেছন ফেনীর দৌলতপুরের আবুল বাশার নামের এক ব্যক্তি। তিনি দাবি, তার দাদার প্রতিষ্ঠা করা এক মাদ্রাসার সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন সিরাজ এবং তখনই তিনি ওই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বলে জানান আবুল বাশার।

বাশার বলেন, আজ একটা ঘটনা আমাকে লাইভে আসতে বাধ্য করেছে। আমি ধর্ষক সিরাজ উদ দৌলা সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। আমি ১৯৯৫ সালে বাড়িতে যাই। তখন সিরাজ উদ দৌলা আমার দাদার প্রতিষ্ঠিত দৌলতপুর সালামাতিয়া মাদ্রাসার সুপার। ছাত্রদের পড়ানোর নাম করে তাদের মাদ্রাসার হোস্টেলে রেখে রাতে সমকামিতায় লিপ্ত হতেন।

তিনি বলেন, একদিন বিকেলে ৯ম শ্রেণির এক ছাত্র আমাকে জানায়, মাদ্রাসার সুপার সিরাজ উদ দৌলা আমার সঙ্গে রাতে সমকামিতায় লিপ্ত হয়। আমি এই ঘটনার বিচার দাবি করলে সিরাজ উদ দৌলা আমার পেছনে লাঠিয়াল বাহিনী লাগিয়ে দেয়। আমি লাঠিয়াল বাহিনীকে প্রতিহত করতে পারলেও সুষ্ঠু বিচার করাতে পারি নি।

তিনি আরও বলেন, বিচার করতে না পারার কারণ সিরাজ উদ দৌলার দোসর, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বিএনপি নেতা মাহবুবল হক, বর্তমানে সোনাগাজীর সোনাপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান দৌলতপুর সালামাতিয়া মাদ্রাসার সুপার বজলুল করিম ও জেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতারণার কারণে সুষ্ঠু বিচার হয়নি।

এ সময় তিনি মাদ্রাসাছাত্রী নিহত নুসরাত জাহান রাফির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আবুল বাশার বলেন, আমি নুসরাতের প্রতি কৃতজ্ঞ যে ১৯৯৫ সালে আমি যে বিচার করাতে পারিনি ২০১৯ সালে তুমি সেই বিচারের দাবি ভাইরাল করতে পেরেছো। তুমি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেও তোমার বিচারের দাবিতে সারা দেশ সোচ্চার।

প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল তারিখে সকাল বেলা সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাত জাহান রাফিকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ছাদে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে বলা হয়। এ সময় নুসরাত মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে মুখোশ পরা লোকজন তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন নুসরাত মারা যান।