‘বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি চলবে’

বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। ‘বিল্ডিং কোড’ না মেনে ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি চলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এমনটা জানান। সভায় সাম্প্রতিক উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ দেওয়ায় বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সভায় বনানীর অগ্নিকাণ্ড, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুক হামলা, সাম্প্রতিক উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। আগামী শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়।

সূত্র থেকে জানা গেছে, বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি যে ভবনটিতে ঘটেছে সেটি বিল্ডিং কোড মেনে হয়নি বলে সভায় আলোচনা তোলা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভবনটি বিল্ডিং কোড না মেনে করা হয়েছে। এসব বিষয়ে কড়া নজরদারি বাড়ানো হবে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মেনে চলার ব্যবস্থা করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনাসহ সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে ভবন মালিক ও ব্যবহারকারীদের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাসমূহের কঠোর নজরদারি বাড়ানোসহ জনসচেতনতা সৃষ্টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকার প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাধারণ মানুষ যারা অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করেছে তাদের ধন্যবাদ জানান। তবে আগুনের ঘটনাস্থলের কাছে বিপুলসংখ্যক উত্সুক মানুষের উপস্থিতির ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

সভায় শেখ হাসিনা বলেন, বনানীতে আগুন নির্বাপণে যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই কেনা। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হয়েছে। এসব না থাকলে বড় সর্বনাশ হতো। তবে আগামীতে এ ধরনের ঘটনা মোকাবেলায় আরো আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

গতকাল বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম, মোহাম্মদ নাসিম এমপি, কাজী জাফর উল্যাহ, সাহারা খাতুন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান প্রমুখ।

বৈঠকে এ বছরের শেষ দিকে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করতে আট বিভাগে আটটি টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের নেতৃত্বে এসব টিমে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদেরও রাখা হবে। এই টিমগুলো তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন সম্পন্ন করবে। বিশেষ করে যেসব জেলা, উপজেলায় মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি বা আহ্বায়ক কমিটি আছে সেগুলোতে সম্মেলন সম্পন্ন করতে তৎপর থাকবে এসব টিম। এ ছাড়া ওই টিমগুলো আগামীতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে কাজ করবে।