ঢাকায় অফিস খোলার জন্য ফেসবুককে চাপ দেয়ার কৌশল নিয়েছে সরকার

স্পেনের বার্সেলোনায় শুরু হতে যাওয়া মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফেসবুকের ঢাকায় অফিস খোলার বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে সরকারের নীতি নির্ধারকদের। এর আগেও বিষয়টি আলোচনায় আসলেও খুব বেশি ফলপ্রসূ হয়নি। তাই আবারও নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। বৈঠকে শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিকে বাংলাদেশে অফিস করার জন্য চাপ দেয়ার কথা চিন্তা করছে সরকার।

এর আগে অনেকবার অনুরোধ করার পরও ফেসবুক ঢাকায় অফিস খুলতে রাজি হয়নি। এবার সরকার বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির ব্যবসায়িক দিকটি প্রাধান্য দিয়ে তাদের চাপ দেয়ার কৌশল নিয়েছে।

আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হবে বলে জানা গেছে। এতে ফেসবুকের শীর্ষ কর্মকর্তারা থাকবেন। বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হকসহ আরও অনেকে অংশ নেবেন।

প্রস্তুতি হিসেবে বিটিআরসি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছে। এতে দেখা যায়, ২০১২ সালের পর থেকে ফেসবুক এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে আট হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করেছে। এটিকেই শক্তি হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ।

বিটিআরসি বলছে, বছরে এখন তারা দেড় হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করছে বাংলাদেশে। এখানকার জনগণও মাধ্যমটি ব্যবহার করে সেবা পাচ্ছে। তবে এখান থেকে তাদের প্রাপ্তিই বেশি।

বর্তমানের সাড়ে তিন কোটি গ্রাহক আগামীতে নয় থেকে দশ কোটিতে উন্নীত হওয়ার সুযোগও আছে বলে ফেসবুকের কাছে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরবেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। এগুলোকেই দরকষাকষির শক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন কমিশনের এক কর্মকর্তা।

দরকষাকষির অংশ হিসেবে বিটিআরসি ফেসবুককে দেয়া ক্যাশ সার্ভারের বিষয়টিও তুলে আনবে বৈঠকে। যেটির বিষয়ে সম্প্রতি হাইকোর্ট থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে ফেসবুকের আঞ্চলিক কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। এবার সুযোগ হচ্ছে একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের লোকদের সঙ্গে আলোচনার। এর মধ্যে একাধিকবার ফেসবুক সরকারের দিক থেকে বন্ধ করে দেয়া হলেও আগামীতে সরাসরি কোনো কিছু বন্ধ করার হুমকি আর দিতে চায় না বলেও জানান তিনি।

বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, তারা বৈঠকের জন্য সবদিক থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। এ দিকে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে ফেসবুকের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের কথা বলা হলেও তাদের কোনো অফিস না থাকায় নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা। ফেসবুকের অফিস বা সার্ভার করানো গেলে সে ক্ষেত্রে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করছে বিটিআরসি।