পলাশের অপকর্মে লজ্জিত বাবা, লাশ গ্রহণ করতেও অনিচ্ছা প্রকাশ
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাইয়ের ঘটনায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সেনা কমান্ডোর গুলিতে বিমান ছিনতাইকারী মাহাদী নিহত বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে জানা গেছে।
তবে নিজেদের সংরক্ষিত ক্রিমিনাল ডাটাবেজ অনুযায়ী র্যাব দাবি করছে, নিহতের নাম পলাশ আহমেদ। সে র্যাবের তালিকাভুক্ত অপরাধী। সোমবার এক ক্ষুদে বার্তায় তার এই পরিচয় জানিয়েছে র্যাব। তবে গতকাল পর্যন্ত তার নাম মাহাদী বলে জানা যাচ্ছিল।
পলাশ আহমেদকে ২০১২ সালে এক নারীকে অপহরণের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। সোমবার দুপুর ৩টায় র্যাব সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
নারী অপহরণ ও বিমান ছিনতাইয়ের মতো ঘটনায় নিজেকে জড়াবে এমনটি বিশ্বাস করতে পারছেন না বাবা মুদিদোকানি বাবা পিয়ার জাহান জর্দার। পলাশের এমন অপকর্মে লজ্জিত বাবা পলাশের লাশ দেখতে চান না, এমনকি লাশ গ্রহণও করতে চান না। পলাশের পরিবারের কেউ লাশ দেখতেও যায়নি।
সোমবার পলাশের বাবা পিয়ার সর্দার জানান, পলাশ ছোট থেকেই তাদের অবাধ্য সন্তান ছিল। সে বখে গিয়েছিল বহু আগেই।তবে সে বিমান হামলার যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক। সেই সঙ্গে পরিবারের জন্য মানহানিকর। এসব অপকর্মের জন্য পলাশের লাশ তিনি দেখতে চান না এমকি বাড়িতেও নিতে চান না বলে জানান পিয়ার জাহান সরদার।তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পলাশের লাশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
‘পলাশের লাশ আমি দেখতে চাই না। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে’-যোগ করেন পিয়ার সর্দার।
পলাশের বখে যাওয়ার বিষয়ে পিয়ার সর্দার জানান, চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল পলাশ। একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ায় পলাশের প্রতি সবার একটু বেশি ভালোবাসা ছিল। এসব কারণে সবার আদরে সে বেপরোয়া হয়ে উঠে।
পলাশের মৃত্যুর খবর শোনে মা শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছে জানিয়ে পিয়ার সর্দার বলেন, ‘পলাশের খবর শোনার পর থেকে তার মা শয্যাশায়ী। তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
ছেলের বখে যাওয়ার বিষয়ে আক্ষেপ করে মুদিদোকানি বাবা বলেন, ছেলে যে সুপথে ফিরে আসে সেজন্য আল্লাহর কাছে নামাজের পর দোয়া করতাম। ছেলেকেও অনেক বুঝিয়েছি, কাজ হয়নি।
দুবাই যাওয়ার জন্য বাবার কাছ থেকে পলাশ টাকা নেন।গত শুক্রবার সে তার বাবাকে জানায় সে আর বাংলাদেশে থাকবে না দুবাই চলে যাবে। এ কারণে সে বাবার কাছ থেকে ৫০০ দিরহাম দাবি করে। বাবা সেই টাকা দেন।
পলাশ সোনারগাঁর তাহেরপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়। এরপর সে আর পড়ালেখা করেনি।
পলাশকে ২০১২ সালে তরুণী অপহরণের অভিযোগ এবং ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল।তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।