দ্বিতীয় বারের মত বিপিএল শিরোপা জয় করেছে কুমিল্লা

বিপিএলের শুরু থেকে ব্যাটিংয়ে ছন্দ পতন থাকলেও ফাইনালে তাঁর সব টুকু যেন পুশিয়ে দিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। তাঁর বাঁ- হাতের নান্দনিক শর্টে যেন মাতাল হয়ে গেল মিরপুরের গ্যালারিতে থাকা ২১ হাজার দর্শক। 

এটি ছিলো তামিমের প্রথম বিপিএল ফাইনাল ম্যাচ। তাই স্কোরটাও স্মরণীয় করে রাখলেন। ৬১ বলে করলেন ১৪১ রানের বিরাট এক ইনিংস। যা বিপিএল ক্যারিয়ারে তাঁর সেরা ইনিংস। সব মিলিয়ে তামিম বন্দনার এই দিনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দ্বিতীয় বারের মত বিপিএল ট্রফি ঘরে তুললো।

প্রথমে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে তামিমের সেঞ্চুরিতে ১৯৯ রান করে কুমিল্লা। ২০০ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই রান আউট হন নারাইন। শিরোপা জয়ের ম্যাচে নারাইনের শূন্য রানে চলে যাওয়ায় চাপে পড়ে ঢাকা। কিন্তু সেই চাপ থেকে মুহূর্তেই স্বস্তি নিয়ে আসেন রনি তালুকদার ও থারাঙ্গা।

এই দুই ব্যাটসম্যানের ঝড় ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় ঢাকা। ২৬ বলে রনি দুর্দান্ত ফিফটি করার পর ঢাকার জয়ের লক্ষ্য আরও সহজ থাকে। এরপর খেলার ৯ ওভারের মাথায় ৪৮ রান করে থারাঙ্গা ক্যাচ আউট হলে ভেঙে যায় ১০২ রানের জুটি।থারাঙ্গার বিদায়ের পর আবার চাপে পড়ে ঢাকা। কিন্তু সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দেন সাকিব আল হাসান।

ওহাবের বলে ৩ রানে ক্যাচ আউট হন। সাকিবের বিদায়ের দুই ওভার পরেই ব্যাটিং ঝড় তোলা রনি তালুকদার পোলার্ডের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়ে। থেমে যায় ঢাকার রানের চাকা।

 এরপর উইকেটে আসেন বিধবংসী রাসেল। কিন্তু জ্বলন্ত রাসেলকে এই দিন যেন ঘুম পাড়িয়ে দিলেন পেরেরা। ১৪ ওভারের সময় বড় শর্ট খেলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন রাসেল।

রাসেলকে হারিয়ে ঢাকা তখন চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। এরপর উইকেটে থাকা পোলার্ডের দিকে তাকিয়ে থাকে ঢাকার দর্শকরা। কিন্তু তিনিও সবাইকে নিরাশ করে মাত্র ১৩ রান ওহাবের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান সাজ ঘরে।

এরপর খেলা গড়ায় শেষের দিকে ১২ বলে ঢাকার প্রয়োজন হয় ৩৩ রানের । উইকেটে থাকা সোহান ও মাহমুদউল কুমিল্লার বোলারদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন কিন্তু সেটা করতে ব্যর্থ তাঁরা। অবশেষে
১৭ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিবরা।

ঢাকা ডাইনামাইটসের সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ১৮২/৯
থারাঙ্গা (৪৮), নারাইন(০), রনি(৬৬), সাকিব(৩), পোলার্ড(১৩), রাসেল(৪), শুভাগত(০), সোহান (১৮), রুবেল(৫)*, মাহমুদউল(১৫), অনিক(১)*।

উইকেট নিয়েছেনঃ ওহাব ৩/২৮, পেরেরা ২/৩৫ ,সাইফউদ্দিন ২/  ৩৮।
এর আগে,
টসে হেরে ব্যাটিংয়ের শুরুটা রাঙাতে পারেননি কুমিল্লার বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান এভেন লুস। মাত্র ৬ রান করে রুবেলের বলে এলবিডব্লিউ আউট হন। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে ব্যাটিংয়ে ধাক্কা খায় কুমিল্লা।

লুইসের বিদায়ের পর তামিমের সাথে ব্যাটিং করতে আসেন বিজয়। বিজয়কে নিয়ে ৩১ বলে পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ফিফটি করেন তামিম। শুধু ফিফটি করেই শান্ত হন না এই বা-হাতি ব্যাটসম্যান। বিজয়ের বিদায়ের পর ইমরুল কায়েসকে নিয়ে খেললেন বিপিএল ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস।

 ৬১ বল মোকাবেলা করে করলেন ১৪১ রানের বিরাট এক ইনিংস। আর পাঁচটি রান করলে তাঁর ইনিংসটাই হতো বিপিএলের সেরা ইনিংস। এর আগে বিপিএলে গেইল ১৪৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন যেটি এখনো বিপিএলের সর্বোচ্চ স্কোর।

কুমিল্লা ভেক্টোরিয়ান্সের সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ ১৯৯/৩
তামিম(১৪১)* লুইস(৬), বিজয়(২৪), শুভো(০), কায়েস(১৭)*।
উইকেট নিয়েছেনঃ রুবেল ১/৪৮, সাকিব ১/৪৫ ।
ঢাকা ডাইনামাইটসঃ সাকিব আল হাসান(অধিনায়ক), নুরুল হাসান সোহান, শুভাগত ,রনি, কাজী অনিক, মাহমুদউল হাসান, আন্দ্রে রাসেল, পোলার্ড, নারাইন, থারাঙ্গা।

কুমিল্লা ভেক্টোরিয়ান্সঃ তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস(অধিনায়ক), বিজয়, আফ্রিদি, পেরেরা, সাইফউদ্দিন, সাঞ্জিত সাহা, শামসুর রহমান, মেহেদী হাসান, ওহাব ও লুইস।