না ফেরার দেশে চলে গেলেন সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়

আজ দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও বাংলা আধুনিক গানের অত্যন্ত জনপ্রিয়, কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় ইন্তেকাল করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্য জনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

সোমবার কলকাতার কাছে সল্টলেকে নিজের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্য জনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। অসুস্থতার কারণে কয়েক মাস আগেই কলকাতার শেঠ সুখলাল কারনানি মেমোরিয়াল (এসএসকেএম) হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল এই সঙ্গীত শিল্পীর। পরে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে যান তিনি। অবশেষে আজ তিনি না ফেরার দেশেই চলে গেলেন।

১৯২৭ সালের ১২ নভেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন জনপ্রিয় এই শিল্পী। ১৯৪৪ সালে পেশাদার সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ১৯৪৫ সালে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। গায়ক, সুরকার হিসাবে দীর্ঘ ছয় শতক ধরে সঙ্গীতের সাথে যুক্ত ছিলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। অনেকেই তার গানের গলার সাথে প্রয়াত কিংবদন্তী শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মিল খুঁজে পান। সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের সুবাদে ২০১০ সালে ভারত সরকারের তরফে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মানা প্রদান করা হয়। ওই বছরেই বাংলাদেশ সরকারের তরফেও ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার’ দেওয়া হয় তাকে। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারও তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মাননা দেয়। এছাড়াও মাদার তেরেসা মিলেনিয়াম, ইন্দিরা গান্ধী অ্যাওয়ার্ড, রাজীব গান্ধী অ্যাওয়ার্ড, উত্তম কুমার অ্যাওয়ার্ডসহ একাধিক পুরস্কারে ভূষিত করা হয় তাকে।

৪০ শতকের শেষ দিকে সলিল চৌধুরীর সুরে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের বেশ কিছু গান জনপ্রিয়তা লাভ করে-যার মধ্যে অন্যতম ‘কান্তি নামে গো’, ‘শ্যামল বরণী ওগো কন্যা’, ‘একদিন ফিরে যাব চলে’ প্রমুখ। একাধিক ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীতও গেয়েছেন তিনি। প্রায় ১৫০০-এর বেশি বাংলা গান রেকর্ড করেছিলেন তিনি। এর মধ্যে আট শতাধিকই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। পাশাপাশি অল ইন্ডিয়া রেডিওতে মহালয়ার অনুষ্ঠান ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-তে ‘জাগো দুর্গা’ গানটি গেয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিলেন তিনি। তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, বাংলাদেশেও তিনি সমান জনপ্রিয়।

এমন এক শিল্পীর প্রয়াণে বাংলা সঙ্গীত জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।